• ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, রবিবার ০১ জুন ২০২৫ ই-পোর্টাল

Janatar Katha

Banner Add
  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও
  • এছাড়াও
    • উৎসব
    • ব্যবসা
    • স্বাস্থ্য
    • শিক্ষা
    • প্রযুক্তি
    • হেঁসেল

নিবন্ধ

নিবন্ধ

বিষাক্ত গোলাপ - (ছোট গল্প)

মৌপিয়া আজ বড় শান্ত হয়ে মধুপ এর দেওয়া একগুচ্ছ গোলাপ বুকে নিয়ে শুয়ে আছে। আজ ওদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী। পাশে ডিভোর্স পেপার হাতে বসে আছে মধুপ। মৌপিয়া পেপার টা মধুপের হাতে দিয়েছে একটু আগে। সসে এ জীবন থেকে মুক্তি চায়। আমরা আজ মুক্ত------ বলে মধুপ। বলে চলে দুজন দুজনকে মুক্তি দিলাম পিয়া। কিন্তু আমি তো এটা চাইনি। আমি যে তোমাকে আজও ভালোবাসি। খুব খুব ভালোবাসি--- বলতে বলতে মধুপ শুয়ে পড়ে মৌপিয়ার পাশে। এই মৌপিয়ার সাথে মধুপের বিয়ে হয় দুবছর আগে ভ্যালেনটাইন ডে তে। তার ঠিক একবছর আগে ঐ দিন ওদের পরিচয় হয় বীরভূমের লাল মাটি তে। বড়ো ব্যবসাদার বাবার আদরের ছোটো ছেলে মধুপ, সখের ফটোগ্রাফার। সখের টানে গেছিল বীরভূম আর মৌপিয়া বন্ধুদের সাথে বেড়াতে গেছিল। সেখানেই দুজনের আলাপ। তারপর এক বছরে নদীতে কত জল বয়ে গেছে। বাড়িতে অমত থাকা সত্ত্বেও মৌপিয়ার সাথেই বিয়ে করে মধুপ। আদরের ছেলের জন্য সব মেনে নেয় মা বাবা। বেশ কাটছিল দুজনের। হঠাৎ করে ওদের জীবনে ঢুকে পড়লেন অরিত্র, মধুপের ছোট্ট বেলার বন্ধু। বিদেশে থাকার জন্য বিয়েতে থাকতে পারেনি তাই দেশে ফিরেই দামি উপহার নিয়ে দেখা করতে আসে। অবাধ যাতায়াত মধুপের বাড়িতে। সবাই বেশ ভালোবাসে অরিত্রকে। অরিত্র ফিল্ম মেকিং এর কাজ করে। নতুন ফিল্মে মৌপিয়া কে কাজের অফার দেয়। মৌপিয়া ও কথা দিয়ে ফেলে মধুপের সাথে না আলোচনা করে। এতে মধুপের খারাপ লাগে ঠিকই কিন্তু মুখে কিছু বলে না। কারণ ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। জীবনের পরিবর্তন শুরু হয় তখন থেকেই। আস্তে আস্তে সেটা সকলের চোখে লাগে। ছোটখাটো বিষয়ে অশান্তি লাগে। সব কিছু স্পষ্ট হয়ে যায় যে দিন আলমারি তে ডিভোর্সের পেপার টা দেখতে পায়। আর ফোনে বলা কিছু কথা কানে আসে মধুপের। সেদিন থেকেই মধুপের মনে মুক্তির চিন্তা আসে। ভাবে আর তো কটা দিন পরেই বিবাহ বার্ষিকী ঐদিন মুক্তি হবে অশান্তির জীবন থেকে। তাই আজ একগুচ্ছ বিষাক্ত গোলাপের সঙ্গে জীবন থেকে মুক্তি উপহার দেয়। নিজেও মৌপিয়ার পাশে চিরদিনের মত ঘুমিয়ে পরে। মুক্তি জীবন থেকে দুজনের।।লেখিকাঃ রাখি রায়

সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২১
নিবন্ধ

End of Game: খেলা শেষ

এমনি বরষা ছিল সেদিন----গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে ধারা স্নান করছে তৃণা। যেন নিজেকে ধুয়ে নিতে চাইছে।পাশের ঘরে অভি মানে অভিজ্ঞান শিকদার বিখ্যাত একটা cosmetic কোম্পানির একজন কর্তা ব্যক্তি , ঘুমোচ্ছে ; হয়তো চিরনিদ্রা।তৃণা ভাবছে কি হবে ? সে কি খুশি হলো?তবে একটা ব্যাপার সে আর কাউকে তারমতো বঞ্চিত হতে দেবে না।সে আজ অভিকে নিয়ে এসেছিল পুরনো দিনটা মনে করাবে এই বলে।একবছর আগে এখানেই এরকম দিনেই অভি শুরু করেছিল এই শরীরের খেলা। তৃণা তখন স্বপ্ন দেখছে সুপার মডেল হবার।সেই স্বপ্নকে সাকার করবে অভি এটাই ছিলো কথা। সেই থেকে বহুবার এখানে এসেছে ওরা।কিন্তু শেষ দুমাস কিছু একটা হচ্ছে ওর আড়ালে সেটা বুঝতে পারছিল তৃণা। গতসপ্তাহে পুরো ঘটনাটা পরিষ্কার হলো যখন তার জায়গায় নতুন একটা মুখ বিশেষ বিজ্ঞাপন টায় দেখ্তে পেল।শোনা কথা গুলো সত্যি সেটা বুঝল তৃণা।তারপর আজ এই দুর গ্রামে তাদের বেড়াতে আসা।এই গ্রামে বর্ষায় সাপের উত্পাত খুব।অভিকে আবার সাপে কামড়ায়নি তো??সবই সম্ভব এই গ্রামে, এই বর্ষায়।লেখিকাঃ রাখি রায়

আগস্ট ২২, ২০২১
নিবন্ধ

Afghanistan: আদিমতার উল্লাস-মধ্যযুগীয় বর্বরতা-অস্ত্রের ঝনঝনানি, চুপ! সভ্যতা মুখে কুলুপ এঁটেছে

আফগানিস্থানে তালিবানদের আধিপত্য কায়েম হয়েছে আবার। ফের আদিমতার পদচিহ্নের সূত্রপাত। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্থানে যে তালিবানি শাসন কায়েম ছিল তা পুনরায় ফিরে এলো। এই দেশের বেশির ভাগ অংশই এখন তালিবানিদের দখলে। শরিয়ত আইন স্থাপন এবং ইসলামিক রাষ্ট্র সামরিক শক্তির আশ্রয়ে গঠন করাই তালিবানদের লক্ষ্য। হঠাৎ করে আবার কেন তালিবানি শাসন বিস্তার? এই প্রশ্নের সম্মুখীন গোটা বিশ্ব, এই উত্থানের পেছনে কাদের মদত রয়েছে - এই প্রশ্ন জাগছে মানুষের মনে। মধ্যযুগীয় বর্বরতা, গণতন্ত্রের হত্যা, সামরিক বাহিনীর কড়া নজরদারি, যেখানে সেখানে মানুষের ন্যুনতম আধিকারে হস্তক্ষেপ, স্বাধীনতা খর্ব করাই হচ্ছে তালিবানদের প্রধান উদ্দেশ্য। কুড়ি বছর পর ফের আফগানিস্থানে তালিবানি শাসন কায়েম আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটাচ্ছে - দাবী বিশেষজ্ঞদের।আরও পড়ুনঃ ফাঁকা পড়ে থাকা ভারতীয় দূতাবাসে কী খুঁজছে তালিবান?বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, আফগানিস্থানের সাধারণ মানুষ দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে, মহিলারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে রয়েছেন, স্কুল কলেজ সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো সব বন্ধ। যদিও তালিবানদের মুখপাত্র ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, আফগানিস্থানে সমস্ত অফিসের কার্যকলাপ স্বাভাবিক নিয়মে শুরু করার কথা। এছাড়াও তিনি আরও জানান, নারীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত রয়েছে এবং নারীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া নিয়ে তাঁদের কোনও বিরোধ নেই। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন কথা বলছে। আফগানিস্থান থেকে মহিলারা সোশাল মিডিয়াতে জানিয়েছেন, তাঁরা নিরাপত্তা নিয়ে ভীষণ ভাবে ভীত, সন্ত্রস্ত হয়ে রয়েছেন। সরকারি টেলিভিশনের মহিলা অ্যাঙ্করকে ছাটাই করেছে কাবুল দখল করেই। হাত পিছমোড়া করে বেঁধে এক মহিলার কপালে গুলি করা হচ্ছে, সেই ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।এরপরও কি তালিবানদের ওপরে কোনও ভরসা করা যায়? নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফা তিনিও উদ্বিগ্ন প্রকাশ করেছেন নারী এবং শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে।আরও পড়ুনঃ তালিবানি আতঙ্কের মাঝেই কেঁপে উঠল আফগানিস্তানমার্কিন সামরিক বাহিনী আফগানদের মাটি ছাড়ার পরই তালিবান শক্তি আফগানিস্থান দখল করেছে। এই ঘটনায় হতবাক বিশেষজ্ঞরা। এখানেই বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে আমেরিকার সংবাদ মাধ্যমেও প্রশ্ন উঠেছে সে দেশের প্রশাসনের কাছে কি আগাম খবর ছিল? একদল আমেরিকান সরকারি কর্মী এমন আভাসের কথাও নাকি জানিয়েছিলেন সে দেশের প্রশাসনকে। আমেরিকান সৈন্য আফগানিস্তানের মাটি ছাড়তেই তালিবানরা প্রবল শক্তিতে দখল নিতে শুরু করে। অস্ত্রের ঝনঝনানি শব্দ যে অনেক দিন বিশ্ববাসী শোনেনি। অস্ত্র ব্যবসাও তলানিতে। অর্থাৎ যুদ্ধ বা গৃহযুদ্ধের দামামা শুরু!আরও পড়ুনঃ টাকা চুরি করে নয়, চটি পড়ে দেশ ছেড়েছি, মুখ খুললেন আসরাফঅন্যদিকে, পাকিস্তান, চীন এবং মধ্য প্রাচ্য-এর দেশগুলো তালিবানদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এমনটাই দেখা গিয়েছে। কমিউনিস্টরাও সমর্থন করছে ধর্মান্ধদের! রাজনীতির স্বার্থে সবই সম্ভব। তানিবানদের আফগানিস্থানে প্রথম সরকার গঠনের পরবর্তী ঘটনার ইতিহাস সারা বিশ্ব আজও ভুলতে পারেনি। সেই স্মৃতির আতঙ্ক ফের মনে করিয়ে দিচ্ছে তালিবানরা। একবিংশ শতাব্দীতেও গণতন্ত্র বাদ দিয়ে ধর্মীয় উন্মাদনায় বন্দুকের নল যদি ক্ষমতার উৎস হয় তা ভয়াবহ হতে বাধ্য। ফের হত্যালীলা, অত্যাচার শুরু করে দিয়েছে। ভারতীয় দূতাবাসের অফিসগুলোতে তন্ন তন্ন করে তল্লাশি চালিয়েছে তারা। এই সভ্যতার যুগে মানুষ উড়োজাহাজের চাকায় ও ছাদে চেপে বসেছে। মাঝ আকাশ থেকে ছিটকে পড়ে মৃত্যু- আতঙ্কের ভয়াবহতা এতেই স্পষ্ট। আফগান নারীরা সন্তানদের প্রাণ বাঁচাতে এয়ারপোর্টে আমেরিকান সৈন্যদের হাতে তুলে দিয়েছে। এভাবেই এগোচ্ছে বিশ্বের সভ্যতা! রাস্ট্রসংঘ, উন্নয়নশীল দেশগুলো টিভির পর্দায় বর্বরতা দেখছে। কী কারণে রাষ্ট্রপুঞ্জ গঠন করা হয় তা-ও এখন প্রশ্নের মুখে। তালিবানদের বর্বরতা কোনও দেশের অভ্যন্তরীন বিষয় বলে এড়িয়ে যাওয়া যায় কি? এদেশের বিদ্বজনেরাও কিম্তু চোখে ঠুলি লাগিয়েছেন। তাঁদের মুখেও কিম্তু লিউকেপ্লাস্টার লাগিয়ে নিয়েছেন। কানে গুঁজেছেন তুলো। এসব বিষয় নিয়ে আলেচনা নৈব নব চ।আরও পড়ুনঃ তালিবানি অন্ধকারের মধ্যেই কী আশার আলো? মহিলা সঞ্চালককে সাক্ষাৎকার তালিবান নেতারজানা যাচ্ছে, আফগানিস্তানের পঞ্জশিরে এখনও তালিবানরা প্রবেশ করতে পারেনি। নর্দার্ন অ্যালায়েন্স প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। দেখা যাচ্ছে আফগান মহিলারাও হাতে অস্ত্র তুলে নিচ্ছে। এবার দখলদারির শুরুতে প্রতিরোধ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আগের তালিবান জমানায় একাধিক শিল্প-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য ধ্বংস করেছে তালিবান গোষ্ঠী। এবারও যে কী করবে তা শীঘ্রই প্রত্যক্ষ করা যাবে।আরও পড়ুনঃ কাবুল বিমাবন্দরে প্রাণ বাঁচানোর লড়াইয়ে ম্লান একরত্তির অকাতর কান্নাএকবিংশ শতাব্দীতে এসেও মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার হচ্ছে মানুষ - কেনও? সেই প্রশ্নই ঘুরে-ফিরে আসে। বিশ্বায়ন তথা আধুনিকতার যুগে এই বর্বরতার ছবি পুনরায় ঘটবে। অন্যদিকে বাকি বিশ্বের মানুষ তামাসা দেখবে? এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।ডঃ অপর্ণা দেবনাথ

আগস্ট ২০, ২০২১
নিবন্ধ

Blood Relation: রক্তের টান - অন্তিম পর্ব

আমরা তখন ইউনিভার্সিটির ছাত্র। মাষ্টার্স করছি। আমি আর দীপ্ত স্কুল থেকে একসাথে পড়ি। কলেজ আর ইউনিভার্সিটিতে ও এক সাথেই থাকি। দীপ্ত খুব ভালো গান করে বরাবর। ইউনিভার্সিটির একটা কম্পিটিশনে যুগ্ম প্রথম হয় ফিজিক্সের দীপ্ত সেন আর ইংরাজীর মধুছন্দা ব্যানার্জী।তারপর ওদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। ধীরে ধীরে সেই বন্ধুত্ব ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে পরিনত হয়।মধুর বাড়ি শিলিগুড়ি। ওর বাবা ওখানকার সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তার উপর ওরা ব্রাহ্মণ। ওদের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা বন্ধুরা খুব চিন্তিত ছিলাম। মধু বড়লোকের মেয়ে ওর কাছে এটা ছেলে খেলা এরকম অনেক কিছু আমরা ভাবতাম। মাস্টার্স কমপ্লিট করে দীপ্ত পিএইচডি করার প্রস্তুতি নিতে থাকে। মধুও মাস্টার্স শেষ করে শিলিগুড়ি গিয়ে একটি স্কুলে চাকরি পায়। এরমধ্যে দীপ্ত পিএইচডিতে যোগ দেয়। কিন্তু মধুর বাবা ওর বিয়ে ঠিক করেন। তখনই সমস্যা শুরু হয়। মধু ওর মা, বাবাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ওর মা বুঝলেও বাবা বোঝে না।অগত্যা মধু পালিয়ে চলে আসে দীপ্তর কাছে। আমরা বন্ধুরা তখন বুঝতে পারি মধুর ভালোবাসা কত গভীর। ওরা বিয়ে করে। তখন দীপ্ত কয়েকটি টিউশন পড়ায় মাত্র, আর স্কলারশিপের কটা টাকা।আমার বাড়ি যেহেতু এখানে আর আমার বাবারও কিছু নামডাক ছিল তাই বাবাকে বলে একটা স্কুলে মধুর একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিই।বেশ আনন্দের মধ্যে দিয়ে কাটতে থাকে ওদের জীবন। স্বাচ্ছন্দ্য স্বচ্ছলতা না থাকলেও আনন্দ ছিল।অনিমেষবাবুর সাথে কথা বলার পর মেহুলের মনের মধ্যে তোলপাড় চলে। কি করবে ও এখন? কিভাবে দুটো বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মানুষকে সামনাসামনি আনবে? যখন আবার একটা মানুষ অসুস্থ। বলা যায় এটা ওই মানুষটার শেষ ইচ্ছা। এইসব ভাবতে ভাবতে বাড়ি ফেরে।ওকে দেখে মাধুরীদেবী মানে ওর দিয়া বলে ওঠে কি ব্যাপার দিদি ভাই আজ এত দেরি কেন? কোথায় গিয়েছিলে? তোমাকে এত গম্ভীর দেখাচ্ছে কেন?বলছি সব বলছি। আগে ফ্রেশ হয়ে আসি। তোমার সঙ্গে আজ অনেক কথা আছে। আলোচনাও আছে অনেক। বলে মেহুল বাথরুমে ঢুকে পড়ে।মাধুরীদেবী ভাবেন কি বলবে মেহুল!একটু পরেই মেহুল বেরিয়ে এসে মাধুরী দেবীকে নিয়ে নিজের ঘরে এসে বসে।শোনো দিয়া আজ আমি যা যা জানতে চাইব সব আমাকে বলবে। কোনও কিছু আমার কাছে লুকিয়ে রাখবে না। অনেক দেরি হলেও একটা চেষ্টা আমাকে করতেই হবে।কি বলছিস আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।বুঝতে পারবে বললে বুঝতে পারবে।সেদিন আমি যখন তোমাকে জিজ্ঞাসা করলাম সৌরীশ সেন নামে কাউকে চেনো কিনা? তুমি চমকে উঠেছিলে আমি সেটা লক্ষ্য করেছি। তার মানে তুমি চেনো।হ্যাঁ না মানে হ্যাঁ চিনি।এবার আমি যা বলছি দেখো সব ঠিক বলছি কিনা?অবাক চোখে তাকায় মাধুরীদেবী মেহুলের দিকে।মেহুল একে একে সব বলে যা শুনেছে অনিমেষ বাবুরকাছে। এবার বলো মা কে কি তোমরা আবার বিয়ে দিতে পেরেছিলে?না না কোলকাতা থেকে ফিরে গিয়ে তোর মা খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন আমাদের ফ্যামিলি ডাক্তার তোর আসার খবর শোনায়। এও বলেন যে তোর মাকে খুব সাবধান থাকতে হবে। শরীরের অবস্থা খুব খারাপ কোনওরকম উত্তেজনা চলবে না। তাই আমরা আর তোর বাবাকে খবর দিতে পারিনি। আর তোর দারুণ চায়নি মাও না। মাধুরীদেবী বলেন আমি জানতাম কোথাও একটা মস্ত ভুল হচ্ছে। বারবার বলেছিলাম মেয়েটাকে দীপ্তকে একবার বলার সূযোগ দিতে।না মেয়ে শুনলে না মেয়ের বাবা। এখন আমি কি করি?? বলে কপাল চাপড়াতে লাগলেন। মাঝখানে তুই কত কষ্ট ভোগ করলি। পারবে ওরা এখন তোকে সেসব ফিরিয়ে দিতে?সেসব এখন ছাড়ো। এখন যেটা করতে হবে মা কে আনতে হবে কলকাতায়। একমাত্র আমার শরীর খারাপ শুনলেই আসবে।তুমি ফোন করে বলো আমার খুব জ্বর। কিছুতেই জ্বর ছাড়ছে না।সেরকমই করলেন মাধুরীদেবী। মধুছন্দাকে ফোন করে বলেন মেহুলের খুব জ্বর।সেকথা শুনে পরদিনই ফ্লাইট ধরে মধুছন্দা চলে আসে। মেহুল একটু নাটক করে শরীর খারাপের।বিকেলে প্ল্যান অনুযায়ী অনিমেষবাবু মেহুলকে দেখতে আসে।অনিমেষ বাবুকে দেখে মধুছন্দা একটু ঘাবড়ে যায়। মেহুল পরিচয় করাতে গেলে অনিমেষ বলেন ওনারা পূ্র্ব পরিচিত। মধুছন্দা এড়িয়ে যেতে চান কিন্তু অনিমেষ বাবু চেপে ধরেন। এবং বলেন সৌরীশ অর্থাৎ দীপ্ত খুব অসুস্থ। প্রথমে শুনতে চায় না তখন মেহুল জোর করে।বলে মা ভুল বুঝে আর কত কষ্ট দেবে মানুষটাকে আর তুমি আমি সবাই কেন আর কষ্ট পাব। একবার বলার সূযোগ তো দিতে হবে।মধুছন্দা বলে তুমি ছোটো যা জানো না তা নিয়ে বড়দের মাঝে কথা বলো না।মেহুল কিন্তু থামে না বলে আর আমি ছোট নেই। আর আমি এখন পুরোটাই জানি। আমার মনে হয় তোমারও জানা উচিত। যে মানুষটা জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে সে কখনও মিথ্যা বলবে না।মধুছন্দা বলে মানে? কে জীবনের শেষ পর্যায়ে?অনিমেষ বাবু বলেন দীপ্ত; ওর ব্রেইনে একটা টিউমার হয়েছে অপারেশন করতে হবে। তাতে ও নাও বাঁচতে পারে। তাই আমাদের সবার অনুরোধ তুমি একবার সত্যিটা শোনো।তারপর সব শোনে মধুছন্দা।মেহুল বলে আমি তো স্যারের ঘরে তোমার অতো বড় একটা ছবি দেখে অবাক হয়ে গেছিলাম। তারপর আঙ্কেল আমাকে সব বলেন।মধুছন্দা অঝোরে কাঁদতে থাকে। বলে সে কি আমাকে ক্ষমা করতে পারবে?অনিমেষ বলেন সব হবে তুমি চলো আমাদের সাথে।সবাই মিলে চলে সৌরীশ সেনের বাড়িতে। অনিমেষ বাবু মল্লিকাকেও ডেকে নেন।অনিমেষ বাবুর সাথে মধুছন্দাকে দেখে অবাক হয়ে যান সৌরীশ।মধু মেহুলকে এগিয়ে দিল ; তোমার মেয়ে, আমি এতদিন আগলে রেখে ছিলাম এবার তুমি সামলে রাখবে। তাড়াতাড়ি তোমাকে সুস্থ হতে হবে। বলে মধুছন্দা কাঁদতে থাকে। মল্লিকা এর মধ্যে খাবার দাবার নিয়ে হাজির। মধুছন্দা মল্লিকার কাছেও ক্ষমা চায়।মল্লিকা বলে, না বৌদি আমার কাছে নয় তুমি দাদার কাছে ক্ষমা চেয়েছ ওতেই হবে। দুঃখ শুধু একটাই ভুল বুঝে তুমি মেয়েটাকে বাবার থেকে দূরে রাখলে। যাক পুরনো সব ভুলে আবার নতুন করে শুরু করো। দাদা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক আর আমার কিছু চাই না।অপরাধ বোধে ভুগতাম তোমাদের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার জন্য নিজেকে দায়ী মনে হত। আজ এতদিন পরে আবার সব ঠিক হল। এবার সবাই একটু মিষ্টি মুখ করো। মল্লিকা প্লেটের মধ্যে মিষ্টি নিয়ে সবাইকে দেয়।মেহুল গিয়ে বাবার পাশে বসে। সৌরীশবাবু ওকে বুকের মধ্যে টেনে নেন।অনিমেষ বাবু বলেন, দীপ্ত একেই বলে রক্তের টান।-সমাপ্ত- লেখিকাঃ রাখি রায়আরও পড়ুনঃ রক্তের টান - প্রথম পর্বআরও পড়ুনঃ রক্তের টান - দ্বিতীয় পর্বআরও পড়ুনঃ রক্তের টান - তৃতীয় পর্ব

আগস্ট ১৫, ২০২১
নিবন্ধ

এই শ্রাবণে...তোমার জন্যে

তোমাকে কখনও কোনও নামে ডাকিনি আমি। সম্বোধন একটা ছিল। সেটা তোমার উপাধি, নাম নয়। মনে মনে তোমাকে নাম দিয়েছিলাম মেঘ শ্রাবনের আগন্তুককে মেঘ ছাড়া কি নাম দেওয়া যায় বলো! কি অদ্ভুত ভাবে তুমি এসেছিলে এক বার্তা নিয়ে আমার জীবনে। কেঁপে উঠেছিলাম ভয়ে। ওই একবারই। তারপরে কি সহজ হয়ে গেল সবটা। যেন এমনটাই হওয়ার কথা ছিল এই পৃথিবীতে, দুটি মানুষের মধ্যে। ছোট ছোট কথা, যা কোনও প্রয়োজনের নয়, কোনও চাহিদার নয়, জগতে কারও কোনও কাজে না আসা কথা। শ্রাবণ থেকে গড়িয়ে গেল আরো কয়েক মাস। কথা বাড়লো, সঙ্গে বাড়লো তোমার পরিধি আর আমার অভিমান। এমনিতেই অভিমান বসে থাকে আমার নাকের ডগায়। যে কোন কথায় তা ঝরতে লাগলো টুপটুপ করে। প্রশ্রয় ছিল কি তোমার তাতে? কি জানি? তারপরে হঠাৎ একদিন ছন্দপতন, হারিয়ে গেলে তুমি... না ভুল বললাম, হারিয়ে নয় চলে যাওয়া, না বলে...আরও পড়ুনঃ আমার প্রথম প্রেমিক, আমার নন্দলালাসেদিন হঠাৎ আমি বুঝলাম তোমাকে ছাড়া কি ভীষণ শূন্য আমি। নিরাশ্রয়, ডানা ভাঙা পাখির মত। আমি প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তোমাকে জানিয়েছিলাম আমার অনুভূতি, ভেতরের ভাঙচুরের কথা। কোনও কারণ দেখতে পারিনি। সত্যিই তো কোন কারণ স্পষ্ট ছিল না। শুধু অনুভব করছিলাম বাঁধন বিহীন সেই যে বাঁধন...অকারণ তুমি আমাকে আশ্বাস দিয়েছিলে সুযোগ হলেই যোগাযোগ করার। কিন্তু কতদিন পরে, বা কোন অবস্থাকে তুমি সুযোগ বলে মনে কর তা তুমি বলতে ভুলেছিলে, আমারও জিজ্ঞাসা করে নেওয়া হয়নি। তাই সে সুযোগ এলো বছর দুয়েক পরে। তোমার হাত ধরেই। তখনও আমার বুক ভরা অভিমান, সামনে আসতে চাইনি আমি। তুমি এলে দৃপ্ত পদক্ষেপে, যেন কিছুই হয়নি, এটাই তো স্বাভাবিক, কালই যেন আমাদের কথা হয়েছে। আর অদ্ভুত ভাবে আমিও ভুলে গেলাম সব, ভুলে গেলাম আমার নির্ঘুম রাতগুলির কথা, ভুলে গেলাম আমার তিলে তিলে ক্ষয়ে যাওয়ার কথা, মনে হলো এটাই তো স্বাভাবিক। তুমি এসে দাঁড়াবে আমার সামনে , আমি কাঁপব ভালোলাগায়, তিরতির করে। সারা রাত ভাববো কাল সকালেই দেখব তোমাকে। আবার গেলে তুমি, সব আবার শেষ হলো। আমিও অনুভব করলাম, প্রতিবার তুমি যেখানে আমাকে ছেড়ে যাও, আমি সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকি। ফিরি না, ফিরতে পারি না। দাঁড়িয়ে থাকি আত্মসমর্পণের আশায়।আরও পড়ুনঃ একা এবং বন্ধুরাআবার দীর্ঘ বিরতির পরে ভাঙল আমার ধৈর্যের বাঁধ। একদিন প্রায় আক্রমণ করলাম তোমাকে, বিদ্ধ করলাম বাক্যবাণে। যে মেয়েটা লজ্জায় কথা বলতে পারতো না, সে যে কি করে এত নির্লজ্জভাবে মুখর হয়ে উঠেছিল আমি আজও বুঝতে পারিনা। কি অদ্ভুত নিপুনতায় তুমি সামলে নিলে আমাকে। জেদী, অভিমানী মেয়ে যেটা আমার ভেতরে বাস করে , তুমি তাকে আদরে ভরিয়ে দিলে। কিরকম স্বপ্নের মত কাছাকাছি আসা, খুব কাছে। আমি বিশ্বাস করতে শুরু করলাম ভালোবাসা আছে, নাহলে এমনটাও কি হয়? হতে পারে কখনও। মুখে বলে না? না বলুক, সবই কি বলতে হবে। এই মেঘের পালকে ভাসতে ভাসতেও আমি তোমাকে বলতাম হে মেঘ, চলে গেলে, বলে যেও কিন্তু। যেন এটাই স্বাভাবিক, তুমি তো সেই যাবেই চলে। ঠিক তাই, হাত ছাড়াতে শুরু করলে, আমি বুঝতে পারছি, তুমি আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছ, আমি অসহায়ের মত দেখছি শুধু, ভেতর থেকে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে, যাও তুমি কিন্তু বলে যাও। প্রতীক্ষার কষ্ট যে বড়ই সাংঘাতিক, আর নিতে পারি না আমি।আরও পড়ুনঃ পিতৃদিবসে বাবাকে খোলা চিঠি এক কন্যারযাওনি তুমি, থেকে গেছো, কিরকম থাকা জানো? নির্মম, নিষ্ঠুর। কি অদ্ভুত ভাবে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছ তুমি। এবারের মত পুতুল খেলা শেষ। পুতুল ধুলোতে পরে থাকলো না কি উঠে দাঁড়াতে পারলো তা নিয়ে কি ভাবনা সাজে তোমার? তোমার যে অনেক দায়িত্ব, অনেক কাজ। তাই আমি তোমার দরজাতে ধাক্কা দিয়ে যাই, তুমি ফিরেও তাকাও না। আমি ফিরতে পারি না। কোথায় ফিরবো বলো মেঘ? উপাসনাগৃহ থেকে ফিরতে হলেও তো দেবতার অনুমতি লাগে! আমি থেকে যাই নামহীন, গৃহহীন, ভিক্ষুকের মত। অথচ এই অনুমতিটুকু পেলেই এই বিস্তীর্ণ পৃথিবীর বুকে হারিয়ে যেতে পারি। তুমি কোনও খবর নাও না আমার, কখনও জিজ্ঞাসা করো না, কেমন আছি আমি, কেমন করে দিন কাটছে আমার। আমি প্রতীক্ষা করি, তুমি কখনও একটি শব্দ লেখো না আমাকে, আমি প্রতীক্ষা করি, কারণ তুমি বলেছ তুমি ব্যস্ত। আমি বারবার জিজ্ঞাসা করেছি, আমি থাকব? তুমি আছো তো আমার জন্যে? আমি অপেক্ষা করব অনন্তকাল, কিন্তু তুমি হারিয়ে যাওনি তো ? তুমি উত্তর দিয়েছো তুমি ব্যস্ত। আমার স্বাভাবিক বুদ্ধি আমাকে প্রশ্ন করেছে ব্যস্ততার চাপে কি তার প্রাত্যহিক দিনযাপন বন্ধ আছে? তাঁর আপনজনদের কোনও কর্তব্য পালন করে না কি সে? ব্যস্ততার চাপে সে তোমারই খোঁজ নিতে অক্ষম? আমি মনকে শাসন করেছি, একি! এই সম্পর্ক তোমার কাছে পবিত্র প্রার্থনার মত। সেই আরাধ্য দেবতাকে বিশ্বাস করা তোমার কর্তব্য। সুতরাং মনে সংশয় আসতে দিও না।এই সংশয়, , প্রেম, উপেক্ষা , অবহেলার দোলায় দুলতে দুলতে আবার ক্ষয় রোগ ধরেছে আমার। প্রতি মুহূর্তে পুড়ছি আমি। অভিমান, রাগ, প্রতীক্ষা সমস্তর সমাপ্তি ঘটছে তোমার শীতল উপেক্ষার দৃষ্টিপাতে।শুধু জানি, আমি চলে যাব, সমস্ত জিনিস গুছিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, শুধু তোমার শেষ কথা বলার অপেক্ষায়। তুমি যেদিন যেতে বলবে, এক মুহূর্তও দেরি করবো না আমি, কোনও কথা বলবো না, শুধু চলে যাবো। তোমাকে ছেড়ে, সব মুছে দিয়ে, সারা জীবনের মত। কোনও দাবি নয়, কোনও ভিক্ষা নয়, স্নেহ, ভালোবাসা কিছুই চাইবো না আমি। একবার বলে তো দেখো, মেঘ! যদি তোমাকে ছেড়ে থাকা শিখতে না পারি, মরে যাব, তবু তোমার দ্বারে কোনদিন আর আসবো না।কিন্তু একটাই প্রশ্ন তোমাকে করার আছে, তুমি পাবে তো এত সমর্পণ কখনও? তুমি ভালো থাকবে তো আমিহীন পৃথিবীতে? কেউ আমার থেকে ভালো বাসবে তো তোমাকে?চিঠির শেষ প্রান্তে এসে মনে পড়লো, তুমি ও আমাকে কখনও কোন নামে ডাকনি, আমি বোধ হয় তোমার কাছে শুধুই কিছু সংখ্যা। আর কে না জানে যে সংখ্যা প্রাণহীন, তাদের মন বলে কিছু থাকে না। তাই নামহীনই থাক এই চিঠি। ভালো থেকো মেঘ, খুব ভালো থেকো। তোমার সবাইকে নিয়ে খুশিতে থেকো। তুমি ভালো থাকলেই আমি ভালো থাকবো, সে যে পৃথিবীতেই থাকি না কেন।।ইতি.....সুদেষ্ণা মুখার্জি

আগস্ট ০৮, ২০২১
নিবন্ধ

Blood Relation: রক্তের টান - তৃতীয় পর্ব

হ্যালো, আঙ্কেল আমি মেহুল বলছি। ...... হ্যাঁ, ঠিক চিনেছেন। ........ হ্যাঁ আমি যাই তো। আপনার সঙ্গে দেখা হয়নি। আমি তো কলেজ থেকে যাই। .........বলছিলাম আপনার সাথে খুব জরুরি একটা দরকার আছে। একদিন দেখা করতে চাই। ......... আপনার সুবিধা মত বলুন আমি ঠিক হাজির হয়ে যাব। ......... ঠিক আছে আঙ্কেল তাহলে কাল দেখা হচ্ছে। এখন রাখি। এই বলে মেহুল ফোন রেখে দিলে। পরের দিন ঠিক সময়ে অনিমেষ বাবু আর মেহুল হাজির নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট জায়গায়। বসো, কি খাবে বলো? কিছু না। একটু কফি। আচ্ছা তাহলে কোল্ড কফি হয়ে যাক। বললেন অনিমেষ বাবুতাই হোক। দুটো কোল্ড কফি অর্ডার দিয়ে জমিয়ে বসলেন। বলো তো মা কি দরকার এই বুড়োটাকে? ঠিক বুঝতে পারছি না কিভাবে কথাটা বলবো? কোনো দ্বিধা না করে বলো। আমার মনেও একটা কৌতূহল জেগেছে তোমার কৌতূহলের সাথে মিলে যেতেও পারে। তাই বলছি বলে ফেলো, কোনও সংকোচ করো না। স্যারের বাড়িতে যাওয়ার পর থেকেই এই প্রশ্নগুলো জেগেছে। কিন্তু স্যারকে জিজ্ঞাসা করতে পারছি না। আর যাকে জিজ্ঞাসা করতে পারি সে তো কাছে থাকে না, তাই ভাবলাম আপনি তো স্যারের খুব কাছের বন্ধু তাই ভাবলাম আপনার কাছেই জানতে পারব। বেশ বেশ বলো না কি জানতে চাও। বলছি স্যারের তো নিজের বলতে কেউ নেই শুনছি, তবে ওনার ঘরে ওই ছবিটি কার? আপনি কি চেনেন ছবির ওই ভদ্র মহিলা কে? অনিমেষ বাবু মেহুলের প্রশ্নে একটু যেন চমকে গেলেন; সাথে সাথে নিজেকে ঠিক করে নিয়ে বলেন আমার মনে যে কথাটি এসেছে তার সাথে তোমার প্রশ্ন রিলেটেড। মেহুল এবার চমকে যায়, মানে? আমার প্রশ্ন হলো তুমি কে? কি তোমার পরিচয়? আর তোমার এই কৌতূহল কেন? তুমি কি চেন? কাকে চেনার কথা বলছেন? ছবির সঙ্গে তোমার মিল আমি সেদিনই খেয়াল করেছি যেদিন হাসপাতালে তোমাকে দেখি। বলতে পারো চমকে গেছিলাম তোমাকে দেখে। তারপর ভাবলাম মানুষে মানুষে তো মিল হয়। তাই চুপ করে ছিলাম। আজ তোমার কথায় আবার সেটা ফিরে এল। বলো চেনো ছবির ওই ভদ্রমহিলাকে? চুপ করে থেকো না বলো!! মেহুল বলে----- হ্যাঁ চিনি। কে হন উনি? আ আ-- মার মা----ঠিক আন্দাজ করেছিলাম আমি। বলেন অনিমেষ বাবু। আপনি আমার মাকে চেনেন? হ্যাঁ খুব চিনি। তা তিনি এখন কোথায়? শিলিগুড়িতে? নাকি অন্য কোথাও? মা সাউথের একটা স্কুলে পড়ায়। আমি দাদু দিদার কাছে বড়ো হয়েছি। মা ছুটিতে আমাদের কাছে আসে। অনিমেষ বাবু এবার জিজ্ঞাসা করেন তোমার বাবা? মেহুলের মুখটা কালো হয়ে যায়। বলতে থাকে, আমি জানি না কে আমার বাবা। কারণ সব জায়গায় মায়ের নাম দেওয়া আছে। যেখানে বাবার নাম দরকার হয়েছে শুধু লেখা আছে ডি. সেন। এর বেশি আমি কিছু জানি না। খুব ছোট বেলায় একবার মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম বাবার কথা। মা খুব কেঁদে ছিল আর বলেছিলেন বাবা হারিয়ে গেছে। তারপর থেকে কোনও দিন কাউকে আর জিজ্ঞাসা করতে পারিনি। স্যারের ঘরে মায়ের ছবি দেখে মনের কোণে তাই এত প্রশ্ন।এখানে কোথায় থাক? কার কাছে?আমি আর আমার দিদা ইউনিভার্সিটির কাছে একটা ভাড়া বাড়িতে থাকি।এবার আঙ্কেল আপনি বলুন আমার মায়ের ছবি স্যারের ঘরে কেন?সেটা জানতে গেলে তোমাকে একটা গল্প শুনতে হবে। অত সময় আছে তো তোমার কাছে?হ্যাঁ আমার কাছে সময় আছে। শুধু একবার বলে দিই দেরি হবে ফিরতে।বলে মেহুল ওর দিকে ফোন করে বলে দেয়। এবার আপনার গল্প শুরু করে দিন।অনিমেষ বাবু বলেন এবার কিছু অর্ডার না করলে এরা তুলে দেবে। তাছাড়া খিদেও পেয়েছে কি বলো?মেহুল ওনার কথা শুনে হেসে ফেলে। বলে তাহলে এদের চিকেন কাটলেটটা খুব ভালো। বলে ও ওয়েটারকে ডেকে দুটি কাটলেট অর্ডার দেয়।এবার আপনার গল্প শুরু করুন আঙ্কেল।গল্প শুরু করেন অনিমেষ বাবু ...............ক্রমশঃলেখিকাঃ রাখি রায়আরও পড়ুনঃ রক্তের টান - প্রথম পর্বআরও পড়ুনঃ রক্তের টান - দ্বিতীয় পর্ব

আগস্ট ০৮, ২০২১
নিবন্ধ

Hilsa: পদ্মায় পড়বে জাল, পাতে পড়বে 'ইলিশ-সুখ'

ভরা বর্ষায় পাতে গরমাগরম ইলিশের দু-টুকরো না পড়লে কি আর দুপুর জমে! তবে এ বার গঙ্গার ইলিশে আকাল, যে কয়েক হাজার কেজি রুপোলি শস্য ঢুকেছিল, তার দামওও দেড়-দুহাজার পার করেছিল। তবে আর বেশিদিন অপেক্ষা নয়, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বাঙালির পাতে পড়তে পারে পদ্মার ইলিশ। আর এমন খবর পাওয়ার পরই আশায় বুখ বাঁধতে শুরু করেছে ইলিশপ্রেমীরা।আরও পড়ুনঃ সন্ত্রাসের আবহেও কাশ্মীরের কৃষক-পুত্রের বড় সাফল্যকরোনা সংক্রমণের জেরে জুলাই মাসের শুরু থেকেই বাংলাদেশে জারি করা হয়েছে কড়া বিধিনিষেধ। তা লাগু রয়েছে এখনও। তবে মৎসজীবীদের কথা মাথায় রেখে গত ২৩ জুলাই থেকেই ৬৫ দিনের জন্য মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে হাসিনা সরকার। এরফলে পদ্মা বা সাগরে যেতে আর কোনও সমস্যা নেই মৎসজীবীদের। বিগত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সমুদ্রে ট্রলার নামানো না গেলেও আশায় বুক বাঁধছেন মৎসজীবীরা। কারণ, এ বছরে বিধিনিষেধের কারণে সমুদ্রে দূষণের পরিমাণ যেমন কিছুটা কমেছে, তেমনই আবার ইলিশের প্রজনন ও বিচরণের জন্য অনুকুল পরিবেশেরও সৃষ্টি হয়েছে। জলের মান ভাল হওয়ায় এ বার ইলিশের স্বাদ ও সংখ্যা বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।বাজারে ইলিশের পরিমাণ বাড়লে দামেও কিছুটা হেরফের হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ব্যবসায়ীরা এই সুযোগও কাজে লাগিয়ে নিজেদের লভ্যাংশ একটি বেশিই আদায় করে নিতে পারে বলেও মত ছোট মৎস্যব্যবসায়ীদের।

আগস্ট ০২, ২০২১
নিবন্ধ

Blood Relation: রক্তের টান - দ্বিতীয় পর্ব

কিরে দিদিভাই কি ভাবছিস? কদিন ধরে দেখছি তুই কেমন অন্যমনস্ক! কি হয়েছে? তোদের গ্রূপের বন্ধুদের সঙ্গে কিছু হয়েছে?কিরে উত্তর দিচ্ছিস না কেন?হুঁ?কি হ্যাঁ হ্যুঁ করছিস?ও হ্যাঁ, বলো কি বলছো?আমি যে এতক্ষণ বকে যাচ্ছি তোর কানে কিছুই ঢোকেনি!?না মানে খেয়াল করিনি; বলো।বলছি তোর কি হয়েছে? কেমন চুপচাপ হয়ে গেছিস! আমার দিদিভাই তো এত চুপচাপ থাকার মেয়ে নয়।না গো তেমন কিছু হয়নি। একটা প্রশ্ন খুব ঘুরপাক খাচ্ছে মাথার মধ্যে।কি প্রশ্ন? আমাকে বলা যাবে?আচ্ছা দিয়া তুমি সৌরীশ সেন নামে কাউকে চেনো?কী!! সৌ-- রীশ সেন? সে --সে আবার কে? আমি চিনব কি করে?না না তুমি চেনো বলিনি। জিজ্ঞাসা করছি চেনো কিনা?না না আমি ঐ নামে কাউকে চিনি না। একটু যেন উত্তেজিত হয়ে পড়লেন মাধুরীদেবী।আরে বাবা ওরকম করছো কেন! উনিইতো স্যার যাকে হসপিটালে ভর্তি করেছিলাম।তাকে আমি চিনব কি করে?না মানে মা ও তো এখানেই পড়ে ছিল। ওনার বয়স মায়ের কাছাকাছি হবে আর উনি ওখানেই পড়ে ছিলেন। তাই জিজ্ঞাসা করলাম।না না আমি চিনব কেমন করে?মেহুল বুঝতে পারলো মাধুরীদেবী র কাছে কোনও সদুত্তর পাওয়া যাবে না। উঠে পড়ল খাবার টেবিল থেকে।মনে আবার একটা খটকা -------- দিয়া এতটা রিয়্যাক্ট করলো কেন?নামটা শুনে যেন একটু চমকেই উঠলো মনে হলো। কিন্তু কেন?মেহুল কলেজে চলে গেল। মাধুরীদেবী মনে মনে মেহুলের বলা কথা গুলো ভাবতে লাগলেন। আরও ভাবলেন মধু এসব শুনলে মেয়েটার পড়া বন্ধ করে নিয়ে না চলে যায় এখান থেকে। ভাবলেন মেহুল যদি ওর মাকে এই কথাগুলো বলে তাহলে আর রক্ষা থাকবে না। মনে মনে বললেন ----- কি যে করি? আমার হয়েছে যত জ্বালা। সারা জীবন বাপ বেটি জ্বালালো এখন নাতনীও সামিল হয়েছে।এদিকে মেহুল কলেজে দুটি ক্লাস করার পর আর ভালো লাগলো না ও রিমা আর সৈকতকে বললো যাবি স্যারকে দেখতে?ওরা ক্লাস আছে বলে গেল না।কিন্তু মেহুল কলেজে আর থাকতে পারল না।রোজ একবার এস. এস. এর বাড়ি না গেলে ওর মন ভালো লাগে না। অদ্ভুত একটা টান অনুভব করে ও। মনে যে ফাঁকা জায়গাটা আছে, যে কষ্টটা আছে সেটা ভুলে যায় ওনার কাছে গেলে।ওদিকে সৌরীশবাবুও অধীর হয়ে মেহুলের পথ চেয়ে থাকেন। ওনার মধ্যে যেন পিতৃ সত্ত্বা জাগৃত হয়েছে মেহুল কে পেয়ে।এইভাবে বেশ কিছু দিন কাটল। কিন্তু মেহুল ওর প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়ার পথ বের করতে পারছে না। ওর শেষ পর্যন্ত মনে এল অনিমেষ বাবুর কথা।ক্রমশঃলেখিকাঃ রাখি রায়আরও পড়ুনঃ রক্তের টান - প্রথম পর্ব

আগস্ট ০১, ২০২১
নিবন্ধ

Blood Relation: রক্তের টান - প্রথম পর্ব

হ্যালো, হ্যাঁ হ্যাঁ মনে আছে। আজ স্যার কে ছেড়ে দেবে। আমি কালকেই হসপিটালে সব কাগজ পত্র রেডি করে রাখতে বলেছি, যাতে বেশি দেরি না হয়।হ্যাঁ রে বাবা বাড়িতে খবর দেওয়া আছে। বাড়িতে তো আছে শুধু সবসময়ের কাজের লোক বিশু দা! ওনার বাড়িতে খবর দিতে গিয়ে পাড়ার চায়ের দোকানে শুনলাম একা মানুষ, বিশুদা থাকে সঙ্গে।ঠিক আছে আমি আধাঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে যাব। রাখছি।বলে ফোন কেটে রেডি হতে লাগল মেহুল।মেহুল সেন, যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে মাসকম্যুনিকেশন নিয়ে পড়ে। তার সাথে সমাজসেবা করে ওর কয়েকজন বন্ধু মিলে।মেহুলকে রেডি হতে দেখে ওর দিদা বলে উঠল আজ আবার হসপিটাল যাবি এখন? কখন ফিরবি? দিন দিন বাউন্ডুলে হয়ে যাচ্ছিস।ডার্লিং মানুষের সেবা করতে চাইছি আর তুমি বলছো বাউন্ডুলে!!তোমার তো জানা আছে আমাদের যে স্যারকে রাস্তায় অসুস্থ হতে দেখে হসপিটালে ভর্তি করেছিলাম ওনার কেউ নেই। একা থাকেন। খুব ভালো মানুষ। আজ ওনাকে ডিসচার্জ করে দেবে। তাই ওনাকে বাড়ি দিয়ে আসতে যাচ্ছি।ঠিক আছে সময় মতো বাড়ি ফিরে এসো। তোমার মা ফোন করলে কৈফিয়ত দিতে পারব না।কুল ডার্লিং; ম্যায় হু না। তোমাকে কিছু বলতে হবে না। যা বলার আমি বলব।ঠিক আছে; খেয়ে যেও। বলে মেহুলের দিদা মাধুরী দেবী ওর ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।কিছুক্ষণের মধ্যেই মেহুল বেরিয়ে পড়ল। হসপিটালে গিয়ে দেখল ওরা যেমন এসব কাজে যুক্ত তাদের দুতিন জন হাজির আর স্যার মানে প্রফেসর সৌরীশ সেনের বন্ধু অনিমেষ রায় দাঁড়িয়ে। এ কদিন উনিই রোজ এসেছেন। স্যার নিষেধ করায় আর কাউকে মানে ডিপার্টমেন্টে খবর দেওয়া হয়নি।হসপিটালে সব মিটিয়ে একটা ক্যাব ভাড়া করে অনিমেষবাবু আর মেহুল সৌরীশ বাবুকে নিয়ে রওনা দিলেন। বাকিরা নিজের কাজে গেল।গাড়ি চলতে লাগলো। অনিমেষ বাবু বললেন এই কদিন এই বাচ্চা ছেলে-মেয়েগুলো যা করল ভাবা যায় না। কে বলে এখনকার ছেলে মেয়েরা স্বার্থপর?ওরা সব বিষয়ে কি ভীষন দক্ষ। সেদিন তো এই মেহুল না থাকলে তোকে বাঁচাতে পারা যেত না। এটি আমি বলছি না ডাক্তারবাবু বলেছেন।সৌরীশবাবু ক্লান্ত শরীর গাড়ির ব্যাক সিটে এলিয়ে দিয়ে বসেছেন। এতক্ষণ বন্ধুর কথা শুনছিলেন।উনি ক্লান্ত গলায় বললেন এখনকার ছেলেমেয়েদের ভালো না যারা বলে খুব ভুল বলে।এবার মেহুলকে বলেন তুমি এবং তোমার বন্ধুরা নিশ্চয়ই পড়াশোনা করো?হ্যাঁ স্যার যাদবপুরেই পড়ি। অন্য ডিপার্টমেন্ট। আপনার পরিচয় জানি আপনার গান শুনে। আপনার গান খুব ভালো লাগে আমার।তুমি ও কি গান করো?হ্যাঁ, মায়ের কাছে শিখেছি।কথাবার্তা বলতে বলতে সৌরীশবাবুর বাড়ি এসে পড়ে।মেহুল আর অনিমেষবাবু দুজনে মিলে একদম ওনার শোওয়ার ঘরে নিয়ে যায় সৌরীশবাবুকে।ওনাকে বিছানায় বসিয়ে সোজা দাঁড়াতেই মেহুলের চোখ চলে যায় দেয়ালে টাঙানো একটা ছবির দিকে।কি হলো মা বসো।হুঁ - হ্যাঁ বসছি। আপনি চুপ করে শুয়ে বিশ্রাম নিন। অনেকটা পথ এসেছেন।আমি বিশুদাকে সব বুঝিয়ে দিই, আপনিও একটু ওষুধ গুলো দেখে নিন।তুমি বিশুকে চিনলে কি করে?আপনাকে হসপিটালে ভর্তি করার পর আপনার ব্যাগে রাখা ছোট ডায়েরিটা থেকে আপনার ঠিকানা নিয়ে খবর দিতে এসে বিশুদার সঙ্গে পরিচয় হয়।স্যরি স্যার আপনার ব্যাগে হাত দেওয়ার জন্য।না না স্যরি হওয়ার কি আছে। এছাড়া কি-ই বা করার ছিল।ঠিক আছে স্যার আপনি দেখুন আর বিশুদা তুমিও দেখে নাও- মেহুল কথা বলছে ঠিকই কিন্তু চোখ বারবার চলে যাচ্ছে ছবিটার দিকে;সেটা খেয়াল করলেন অনিমেষবাবু। উনি নিজেও কম অবাক হননি মেহুলকে দেখার পর। তবুও ভেবেছেন মানুষে মানুষে মিল তো থাকে। তবুও মনের কোনে একটা প্রশ্ন বারবার উঁকি দিচ্ছে।মেহুল সব বুঝিয়ে দিয়ে আবার আসার কথা দিয়ে বেরিয়ে পড়ে সৌরীশবাবুর বাড়ি থেকে।ভদ্রলোকের জন্য খুবই মায়া হচ্ছে, অসুস্থ মানুষ, একা, দেখাশোনা করার এক ঐ কাজের লোক ছাড়া কেউ নেই। এইসব সাত পাঁচ ভাবছে আর মনের মধ্যে উঁকি দিচ্ছে ছবিটা।বারবার মনে হচ্ছে কোথায় পেলেন ঐ ছবি উনি!!এমন সময় ফোন বেজে উঠলোহ্যাঁ ডার্লিং আসছি একঘন্টার মধ্যে, বলে ফোনটা কেটে একটা ট্যাক্সি ধরলো।ক্রমশ....লেখিকাঃ রাখি রায়

জুলাই ২৫, ২০২১
নিবন্ধ

Forgive Me: রূপু আমাকে ক্ষমা করিস

পলা না! এই নামটা হটাত শুনে পৌলমী বিস্ময়ের সঙ্গে পিছন ফিরে তাকাতেই সম্বোধনকারী বলে উঠলোকি রে চিনতে পারছিস না? না কি চিনতে চাইছিস না? আমি রে রূপসা।উফ্ফ কতদিন পরে তোকে দেখলাম। কোথায় থাকিস এখন? তুই আগের থেকেও সুন্দর হয়েছিস। এক নিশ্বাসে কথা গুলো বলে থামল রূপসা।পৌলমী অবাকই হয়েছে রূপসাকে দেখে কারণ সত্যিই ও চিনতে পারেনি। কি হয়ে গেছে রূপসা। একটু অস্বস্তি বোধ করলো পৌলমী।তাছাড়া ওর সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছাও খুবএকটা নেই, তাই ওকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বলল অফিসের কাজে এসেছি কিছুদিনের জন্য।চল না দুজনে একটু বসি আগের জায়গাটায়। অনেক কথা আছে তোর সঙ্গে।না রে এখন একটা মিটিং আছে আমাকে যেতে হবে।পরে শুনব বলে চলে যাচ্ছিল পৌলমী। রূপসা হাতটা ধরে আটকে বলল তাহলে তোর ঠিকানা টা দে যাব একদিন তোর কাছে। পৌলমী চারিদিকে তাকিয়ে দেখে দু এক জন অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে।রূপসার হাতটা যেন অদ্ভুত শীতল।পৌলমী একটা কার্ড বের করে দিয়ে বলল ফোন করে আসিস। বলে চলে গেল।তারপর একটা ক্যাব বুক করে গন্তব্যস্থলে যাওয়ার জন্য।মনটা যেন কেমন একটা বিষণ্ণতায় ভরে গেল।কাকতালীয় ভাবে ক্যাবএর চালক ছেলেটি -- হারিয়ে যাওয়া বন্ধুর সাথে সকাল বিকালবেলা--- গান টা চালিয়েছে।চোখের সামনে কলেজের দিনগুলো ভেসে উঠলো।পৌলমী আর রূপসা দুই অভিন্ন হৃদয় বন্ধু। কলেজে সবাই ওদের মাণিকজোড় বলে। দুজনের মিল খুব , দুজনেই লেখাপড়া আর খেলাধুলায় দুটোতেই ভালো। কিন্তু কোনো হিংসা ছিলনা দুজনের মধ্যে। শুধু অর্থনৈতিক ফারাক ছিল, পৌলমী ছিল শহরের এক নাম করা বনেদি বাড়ির মেয়ে আর রূপসা ছিল মফস্বলের মধ্যবিত্ত ঘরের । কিন্তু এটা ওদের বন্ধুত্বএর বাধা হয়ে দাঁড়ায় নি।বেশ কাটছিল ওদের পড়াশুনা আর খেলা ধুলা নিয়ে।কিন্তু ওদের মাঝে কোথা থেকে চলে এলো স্যান্ডি ( সন্দীপ সামন্ত) । ফাইনাল ইয়ারের শুরুতেই পৌলমীর সঙ্গে পরিচয় হয় ছেলেটার।এই সম্পর্ক যেন দুই বন্ধুর সম্পর্কের বাঁধন টা আলগা করে দেয়।রূপসা বারবার বারণ করে পৌলমীকে ছেলেটার সঙ্গে মিশতে কিন্তু পৌলমী শোনেনা।পৌলমীর বাড়ি খুব রক্ষণশীল ।রূপসা বোঝায় পৌলমী কে যাতে ও এই সম্পর্কটা থেকে বেরিয়ে আসে। কিন্তু পৌলমী বোঝে না।রূপসা এও বলে ওর বাড়িতে জানতে পারলে ওর সব বন্ধ হয়ে যাবে।পৌলমী রূপসাকে এড়িয়ে চলতে থাকে।এর মধ্যে ওদের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়।ঠিক শেষ পরিক্ষার আগের দিন একটা বেনামী চিঠি পৌলমীর বাবার হাতে এলো যাতে পৌলমীর সঙ্গে স্যান্ডির সম্পর্কের কথা লেখা আছে। পৌলমী বুঝল এটা রূপসার কাজ। কারণ ও ছাড়া আর কেউ জানত না।ভীষণ অভিমানে রূপসার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করলো পলা। কিন্তু মনে একটা প্রশ্ন থেকেই গেলো কেনো করলো রূপসা এটা?আজ থেকে দশ বছর আগের ঘটনা এসব।দশ বছর পর আবার দেখা। কি বলতে চায় ও? এসব ভাবছিল ড্রাইভার ছেলেটির ডাকে সম্বিত ফিরল পৌলমীর।নেমে ভাড়া মিটিয়ে এপার্টমেন্ট এ ঢুকল। এটাই ওর বর্তমান ঠিকানা। ফ্ল্যাট এ ঢুকে শপিং করা জিনিস গুলো রেখে স্নান করে সামান্য কিছু খেয়ে শুয়ে পরলো।আজ খুব ক্লান্ত লাগছে মনটাও ভালো নেই। ঘুম ভাঙলো কলিং বেলের আওয়াজে।ক্যুরিয়ার এসেছে। খুলে দেখে একটা চিঠি, রূপসার।প্রিয় পলাজানি আমার উপর তর খুব রাগ, অনেক অভিমান। তাই আমার সঙ্গে কথা বললি না।কিন্তু তোর মনে যে প্রশ্নটা আজও তোকে কষ্ট দেয় তর উত্তর তো আমার কাছেই আছে। সেদিন আমার কোনো উপায় ছিলনা ও ছাড়া।তোকে বহুবার নানা ভাবে বারণ করা সত্বও তুই কিছুতেই আমার কথা শুনলি না।স্যান্ডিকে আমি অনেকদিন ধরে চিনি। ও আমাদের এলাকার কুখ্যাত নেতার ছেলে। ওর দৌরাত্বে এলাকার মেয়ের অত্তিস্ট হয়ে গেছিল। কিন্তু বাবা রাজনৈতিক নেতা বলে কেউ কিছু করতে পারত না। কিন্তু একটা ঘটনার পরে ওর নামে অনেক অভিযোগ জমা পড়ায় ওকে শহরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ওর যে ভালো মানুষের রূপটা দেখেছিলি ওটা ভেক । মেয়ে পোটানোর মুখোশ। ঐ ভাবে ও অনেক মেয়ের সর্বনাশ করেছে।যেদিন তুই আমাকে ওর ছবি দেখালি সেদিন থেকেই তোকে সাবধান করেছি। তুই শুনলি না। অমর সঙ্গে কথা বলাও প্রায় বন্ধ করে দিলি। কিন্তু যেদিন ও আমাকে তোর সঙ্গে দেখল বুঝে গেল যে আমি বাঁধা দেবো। ব্যাস ও অমনি প্ল্যান করে ফেলল তোর সর্বনাশ করার। ওর দুর্ভাগ্য বশত আমি জেনে ফেলি।তখন আর সময় ছিলোনা তোকে বোঝানোর। আমার হাতে তো কোনো প্রমান ছিলোনা। তাই কাকুকেই চিঠি লিখলাম।যেদিন থেকে তোর বাড়ির লোক তোকে পাহারা দিতে লাগল ও বুঝল এটা আমার কাজ। শুরু হলো অমানসিক অত্যাচার। শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চলতো। মুখ বুজে সব সহ্য করছিলাম। কিন্তু কতদিন? আর না পেরে নিজেকে শেষ করে দিলাম একদিন।কিন্তু তোর কষ্ট আমাকে কষ্ট দিত। সত্যি টা যে তোকে বলা হয়নি।সেদিন যদি আমি তোর বাড়িতে না জানাতাম তাহলে পরীক্ষার শেষতারপর কি হলো জানিস? আমি পরীক্ষার পর বাড়ি গেলাম। একদিন ওর বাবা এলাকার কুখ্যাত নেতা আমার বাবার কাছে এলো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে। হ্যাঁ আমার সঙ্গে স্যান্ডির । ঠিক প্রস্তাব নয় হুমকি বলতে পারিস। নাহলে বাবার দোকানটা বন্ধ করে দেবে। সবার কথা ভেবে আমি রাজী হয়ে গেলাম।বিয়ে হয়ে গেল। কোনোরকম অনুষ্ঠান ছাড়া।ফুলশয্যার রাতে বুঝলাম আমার শাস্তি বিয়েটা। তোকে সাবধান করার শাস্তি।শুরু হলো অকথ্য অত্যাচার। মানসিক আর শারীরিক ।মুখ বুজে সব সহ্য করতে লাগলাম বাবা ,মা,ভাইয়ের কথা ভেবে। কিন্তু কতদিন সহ্য করবো বল? তাই একদিন নিজেকে শেষ করে ফেললাম।কিন্তু তোকে যে সত্যি টা বলা হয়নি।সেদিন তোর বাড়িতে না জানালে তোর চরম সর্বনাশ হয়ে যেত। যেদিন আমাকে তোর সঙ্গে দেখে স্যান্ডি সেদিন ও প্ল্যান করে লাস্ট এক্সামের দিন তোকে ওদের বাগান বাড়িতে নিয়ে যাবে।আমি আর ঠিক থাকতে পারলাম না ।তোর বাড়িতে চিঠিটা লিখ্লাম। কারণ তোকে বোঝানো যাবে না। এবার তোর উত্তর পেলি তো? এবার নিশ্চিন্তে ভালবাসা দিয়ে নীড় টা গড়ে তোল। তোর কোনো ভয় নেই। তাকেও আমি শেষ করে দিয়েছি।তুই ভালো থাক। এবার আমার মুক্তি-রূপসাপড়তে পড়তে চোখটা ঝাপসা হয়ে এলো পৌলমীর। শেষ টুকু আবার পড়বে বলে চোখটা মুছে দেখে সব সাদা। কিছু লেখা নেই। পৌলমী হাহাকার করে ওঠে। বলে রূপু আমাকে ক্ষমা করিস।লেখিকাঃ রাখি রায়

জুলাই ১৮, ২০২১
নিবন্ধ

Jagannath: রথের রশি টানতে না পারার অক্ষমতায় বেদনাতুর শিক্ষক জগন্নাথ, এ এক মর্মস্পর্শী সংগ্রামের কাহিনী

জন্মের সময় থেকেই দুটি হাত নেই। সেই কারণে সাধ থাকলেও প্রভু জগন্নাথ দেবের রথের রশি টানতে পারেন না প্রতিবন্ধী জগন্নাথ বাউরী। পূর্ব বর্ধমানের আউসগ্রামের এই জগন্নাথ রথের দিন প্রভু জগন্নাথদেব স্মরণে ব্রতী হন ঠিকই । তবে দুই হাত না থাকার কারণে রথের রশি টানতে না পারাটা রথের দিনে তাঁকে বড়ই বেদনাতুর করে তোলে।আরও পড়ুনঃ মাতৃ দিবস ও রবীন্দ্রনাথআউসগ্রাম ১ ব্লকের বেরেন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলুটি গ্রামে বাড়ি বছর আটত্রিশের জগন্নাথ বাউরীর। তিনি বাড়ির বড় ছেলে। তাঁর ছোট ভাইয়ের নাম বলরাম। জগন্নাথ বাবু জানান, জন্মের সময় থেকেই তাঁর দুটি হাত নেই। তখন থেকেই তাঁদের গ্রামের লোকজন প্রভু জগন্নাথ দেবের সঙ্গে তাঁর তুলনা করতে শুরু করে। এমনকি তাঁর বাবা লক্ষণচন্দ্র বাউরী ও মা সুমিত্রা বাউরীও মনে করতেন প্রভু জগন্নাথ দেবের আশীর্বাদে একদিন তিনি নিজের পায়ে দাঁড়াবেন। তাঁকে স্কুলে ভর্তি করার জন্য শৈশবে তাঁর বাবা নিয়ে যান বেলুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভূতনাথ পাল মহাশয় তাঁর বাবাকে বলেন, প্রভু জগন্নাথ দেবকে স্মরণ করে তোমার ছেলের নাম রাখ জগন্নাথ। তাঁর বাবা প্রধান শিক্ষক মহাশয়ের সেই কথা মেনে নেন। এরপর থেকে জগন্নাথ বাউরী নামেই তাঁর পরিচিতি হয়। ওই নামেই প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু হয় তাঁর লেখাপড়া জীবন।আরও পড়ুনঃ উইম্বলডনের নতুন রানি অ্যাশলে বার্টি, তৈরি করলেন অন্য নজিরযুগ বদলের সঙ্গে তাল মিলিয়েই বদলেছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ধরন ধারন। কিন্তু বিশ্বাস ও ভক্তি ভাবে কোনও বদল আসেনি বাউরী পরিবারে । দিন আনা দিন খাওয়া বাউরী পরিবারের সকলে আজও সব কাজে তাই প্রভু জগন্নাথ দেবের প্রতি ভরসা রেখেই চলেন। একসময়ে জগন্নাথবাবুর বাবা ও মা ক্ষেতমজুরির কাজ করে বহু কষ্টে সংসার চালাতেন। জগন্নাথ বাবু জানান, তাঁর পা ধরে পায়ে পেন্সিল গুঁজে দিয়ে তাঁকে বাংলা ও ইংরেজি অক্ষর লেখা শিখিয়েছিলেন বেলুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভূতনাথ পাল। পায়ে করে লেখা শিখতে পারার পরেই তাঁর লেখাপড়া শেখার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। এরপর থেকে শত কষ্টের মধ্যেও তিনি লেখাপড়া চালিয়ে যান। সাফল্যের সঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি বেসিক ট্রেনিং কোর্সে ভর্তি হন। ট্রেনিং সম্পূর্ণ হওয়ার পর তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরি পান।বিগত প্রায় ১২ বছেররও বেশী সময়কাল ধরে তিনি আউসগ্রামের জয়কৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। জগন্নাথ বাবু বলেন ,পায়ের আঙুলে চক পেনসিল গুঁজে নিয়ে তিনি পায়ে করেই বোর্ডে লিখে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের পড়া বোঝান । তা নিয়ে কোনও অবিভাবক বা পড়ুয়া কেউ কোনদিন আপত্তি তোলেনি। বরং তাঁরা তাঁর পড়ানোটাকেই মান্যতা দিয়েছেন।বিদ্যালয়ের সহকর্মী ছাত্র-ছাত্রীরাও সকলে তাদের প্রিয় জগন্নাথ স্যারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।আরও পড়ুনঃ আন্তর্জাতিক টেনিসে ঐতিহাসিক সাফল্য বাঙালি তরুণেরশিক্ষক জগন্নাথ বাউরী তাঁর সংসার জীবনের দায়দায়িত্বও যথাযথ ভাবে পালন করেন। স্ত্রী লক্ষী বাবা-মা-ভাই-বোন সকলকে নিয়ে এখন জগন্নাথ বাবুর ভরা সংসার। এই বাউরী পরিবার রথযাত্রা উৎসবের দিনটি ভক্তি সহকারে পালন করেন। জগন্নাথ বাউরী আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, প্রভু জগন্নাথ দেবের দুটি হাত নেই। একইভাবে জন্মের পর থেকে তাঁরও দুটি হাত নেই। তিনি দেবতা জগন্নাথ দেব হতে না পারলেও তাঁর শারীরিক গঠন জগন্নাথ দেবের মতই। তাই জ্ঞান হবার পর থেকে প্রভু জগন্নাথ দেবকে তিনি তাঁর আরাধ্য দেবতা বলে মেনে আসছেন। সেই কারণেই প্রতিবছর তিনি রথযাত্রা উৎসবের দিনে প্রভু জগন্নাথ দেবের প্রার্থনা করেন। জগন্নাথবাবুর আক্ষেপ, দুটি হাত নেই বলে আমি রথের রশি টানতে পারি না। এই বিষয়টি আমাকে বড়ই ব্যথিত করে। সাধ থাকলেও রথের রশি টানার বাসনা হয়তো এই জীবনে আর পূরণ হবেে না।

জুলাই ১২, ২০২১
নিবন্ধ

Mother's Day: মাতৃ দিবস ও রবীন্দ্রনাথ

ছেলেটা বাড়ি নেই একবছরের বেশি হয়ে গেছে, কবে ফিরবে কি জানি! মা-কে ফোন করার সময় হয় না। হলেও একটু কথা বলেই ছেড়ে দেয়। বৌকে নিশ্চয়ই সব বলে। আর মেয়েটাও হয়েছে সেরকম, বাপের বাড়ি আসতেই চায় না। এইসব বসে বসে ভাবছিলেন মাধুরী। আর আমার বৌমাকে দেখ প্রত্যেক সপ্তাহে মা বাবার কাছে যাওয়া চাই। বিয়েটা ছেলে নিজের পছন্দ মত করেছে। কিন্তু ছেলে হাত ছাড়া হয়ে যাবে বলে বিয়েটা মেনে নিতে হয়েছে মাধুরীকে। কিন্তু বৌকে খুব একটা পছন্দ করেন না। মাঝে মাঝে ভাবেন কোথায় নিজের পছন্দের মেয়ের সাথে বিয়ে দেব, ঘরকন্নার কাজ শেখাবেন নিজের হাতে তা নয় ; বাবু যে কি দেখে এই মেয়েকে বিয়ে করলো কি জানি বাপু? না আছে কোনো রূপ আর গুণ কি আছে কি জানি! এই সব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে মেয়েকে ফোন করলেন----- হ্যালো, মান্তু?হ্যাঁ মা বলো কি বলবে তাড়াতাড়ি বলো। আমি এখন খুব ব্যস্ত। আজ Mothers Day তাই তোমার নাতনী আমাকে নিয়ে কোথায় যেন যাবে। বলো তাড়াতাড়ি বলে ফেলো। ও তাহলে থাক পরে কথা বলবো। বলে মনটা খারাপ করে ফোনটা কেটে দিল। ভাবলেন হায়রে, আজ মাতৃ দিবস তাই তোর মেয়ে তোকে নিয়ে কোথাও যাবে আর আমি যে তোর মা সেটা ভুলে গেলি। এমন সময় ফোন বেজে উঠলহ্যালো মাধুরীদেবী বলছেন? হ্যাঁ, কে বলছেন? আপনার একটা parcel আছে। একটু দরজার সামনে আসবেন Please? ফোন রেখে মাধুরী ভাবতে লাগলেন কে আবার আমার জন্য কী পাঠালো! মনে হয় আমার বাবু সারপ্রাইজ গিফ্ট পাঠিয়েছে, নাহলে মান্তু মনে হয়। তাই আমার সঙ্গে এখন কথা বললো না। এই ভাবতে ভাবতে গেটের কাছে গিয়ে দেখেন একটি অল্প বয়সী ছেলে হাতে একটা ফুলের তোড়া আর একটা প্যাকেট নিয়ে দাঁড়িয়ে। হ্যাপি মাদারস্ ডে মাসীমা বলে ছেলেটি এগিয়ে দিল জিনিসগুলো মাধুরীর দিকে। ছেলেটির থেকে হাসি মুখে জিনিসগুলে নিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়েন। মনে কৌতূহল কে পাঠিয়েছে--- ছেলে না মেয়ে? ফুলের সঙ্গে একটা চিঠি, উপরে লেখা আগে প্যাকেট খোলো। মাধুরী আস্তে আস্তে প্যাকেট খুললেন। একটা পিওর সিল্ক, ওনার ভীষণ পছন্দের। সুন্দর একটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার বই। এবার চিঠি খুলে পড়তে লাগলেন--মা, জানি ভাবছো কে পাঠালো তোমাকে উপহার? ভেবেছিলে তো তোমার মেয়ে মান্তু কিংবা তোমার বাবু। আমার কথা তোমার মনে আসবে না আমি জানি। কারণ আমাকে তুমি আজও মেনে নিতে পারোনি। কিন্তু আমার কাছে তুমি আমারও মা। আজ মাতৃ দিবস। আজ তুমি মনখারাপ করে বসে থাকলে আমার যে ভালো লাগবে না মা। আমি বেরোবার সময় দেখলাম তোমার মনটা কোনও কারণে আজ ভালো নেই। মন খারাপ কেন মা গো? আমি আছি তোমার সাথে সবসময়। আমি জানি তোমার পছন্দ। দেখতো ঠিক জেনেছি কিনা? আর শোনো অনেক সবার জন্য ভেবেছো এবার শুধু নিজের জন্য ভাববে। আবার আবৃত্তি শুরু করতে হবে।শোনো বিকেলে এই শাড়িটা পড়ে তৈরি থেকো এক জায়গায় যাবো। এবার তো একটু হাসো আমার মিষ্টি মা। তোমার মেয়েপিয়াসীচিঠি পড়তে পড়তে চোখ জলে ভরে গেছে মাধুরীর। যার কথা কোনও দিন মনে ঠাঁই পায়নি আজ সে এতকিছুর কথা ভেবেছে তার জন্য অথচ নিজের পেটের সন্তানরা মায়ের কথা ভুলেই গেছে। মেয়েটা কথাই বললো না! আজ জীবনে প্রথমবার মাতৃ দিবসে কেউ এভাবে আমার কথা ভাবলো রে মা; আজ রবীন্দ্র জয়ন্তীর দিনে তুই আবার আমার প্রাণের ঠাকুরকে ফিরিয়ে দিলি। তুই তো আমার সত্যিকারের মেয়ে। আজ আমার মাতৃ দিবস আর রবীন্দ্র জয়ন্তী সার্থক করলি। ফোন করে পিয়াসীকে বললেন মাধুরী। পিয়াসীর চোখেও জল। আজ সে পেরেছে।

জুলাই ১১, ২০২১
নিবন্ধ

A New Beginning: নতুন প্রভাত

রাখী রায়আকাশের হাজার তারার মাঝে জানি না কোথায় তুমি মা?? আজ মা-কে খুব মনে পড়ছে, কথা বলতে ইচ্ছা করছে মায়ের সঙ্গে----তাই পায়ে পায়ে টেবিলে রাখা মায়ের ছবির সামনে এসে বসল সংকল্প---আচ্ছা মা আমার সঙ্গে কেন এমন হয় বলতে পারো? বাবার অবহেলা তোমাকে যখন একটু একটু করে হতাশার গিরিখাতে ঠেলে দিচ্ছিল তখন তো আমি কত ছোট ছিলাম, তবুও চেষ্টা করতাম তোমাকে ভালো রাখার। কিন্তু না আমি পারিনি তোমাকে রক্ষা করতে।। আমাকে এই বিশাল পৃথিবীর বুকে একা রেখে তুমি অজানার জগতে হারিয়ে গেলে। দাশুদা আর উমা পিসি না থাকলে আমার যে কি হত কে জানে! তুমি অ্যাসাইলাম থেকে আর ফিরে এলে না। এলে তো স্বর্গরথে চেপে। আমি সব ভুলে পড়াশোনায় ডুবে গেলাম। শপথ করলাম হতাশায় মানুষকে হারিয়ে যেতে দেব না। না বাবা আমার অর্থনৈতিক কষ্ট রাখেনি। কিন্তু পিতৃ স্নেহ কী জানতে পারিনি। আবার দেখো কলেজ জীবনের প্রথম প্রেম চেতনাকে হারালাম ওর বাবার অহংকার আর একগুঁয়েমির কাছে। সেদিন চেতনাও বিদেশে যাওয়ার লোভটা সামলাতে পারেনি। আমার ভালোবাসাকে উপেক্ষা করে চলে গেল। আজ যখন আমি নিজেকে নিজের মত করে বুঝিয়ে কাজে ডুবতে চাইছি হঠাৎ আবার বিড়ম্বনা। কেন বলতে পারো বারবার আমার সঙ্গে এমন হয়? কেন রে কী হয়েছে সোনা? মা তুমি এসেছ?হ্যাঁ রে এসেছি আমি। এতদিন কেন আসোনি মা? তুইতো এমনি করে আমাকে ডাকিসনি বাবুকি হয়েছে তোর? এত অস্থির কেন তুই? আজ চেম্বারে বসে আছি, তখন আর পেশেন্ট নেই ----আচ্ছা মা তুমি জানো আমি কি কাজ করি? হ্যাঁ রে হ্যাঁ সব জানি। আমাকে ওইভাবে হারিয়ে তুই মানুষের মনের ক্ষতগুলো সাড়াবার শপথ নিয়েছিস। একদম ঠিক বলেছেন মা। মানুষের মনের চোরাকুঠুরিতে অনেক এমন কথা থাকে যা মানুষ কাউকে বলতেও পারে না আবার সহ্য করতেওপারে না, তখন হতাশা গ্রাস করে। আমার কাজ সেইসব না বলা কথা মনে গভীর থেকে টেনে বের করে নিয়ে আসা।একজন হতাশাগ্রস্ত মানুষ যখন আবার স্বাভাবিক হয়ে যায় তখন খুব ভালো লাগে মা।এভাবেই তুই এগিয়ে যা বাবা। মানুষের পাশে যেন থাকিস বাবা। এখন বল দেখি তোর কী হয়েছে?হ্যাঁ বলি--- আজ যখন প্রায় চেম্বার খালি আমি একটু রেস্ট করছি তখন হঠাৎ একজন তার মেয়েকে নিয়ে হাজির হয়। প্রথমে একটু বিরক্ত হলেও ভেতরে আসতে বলি। আমি তো অবাক ভদ্রলোককে দেখে। কেন? কে ছিল? চেতনাকে নিয়ে ওর বাবা। আমি যাকে ভালোবেসে ছিলাম সেই চেতনা। প্রানবন্ত, উচ্ছ্বল মেয়ে। রবীন্দ্র সঙ্গীত যার প্রান। সেই চেতনা আজ চুপচাপ হতাশায় ডুবে গেছে। ওর বাবা আজ আমার কাছে ক্ষমা চাইছে। কিন্তু মা আমার মনে তো কোনো ক্ষোভ নেই। আজ আমি বুঝতে পারছি না কি করব? আজকের চেতনার সঙ্গে কলেজের চেতনার কোন মিল নেই। প্রানবন্ত মেয়েটি, আজ নিষ্প্রাণ হয়ে গেছে। যার রূপ ছিল জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেন তার চেহারা আজ শীর্ণকায়। আজ ওকে দেখে আমার একটা কথাই বারবার মনে হচ্ছে যে বাবা মায়েরা মেয়েদের বিয়ে ছাড়া আর কিছু কেন ভাবতে পারে না কি জানি? চেতনার বাবার অহংকার মেয়েটার সর্বনাশ করে দিল। বনেদি বাড়ির মেয়ে বলে সেরকম বন্ধু ছিল না। আমাদের কথা জানতে পেরে খুব তাড়াতাড়ি ওর বিয়ে দিয়ে দেয়। আমি তখন পর্যন্ত নিজের পসার জমাতে পারিনি। আর চেতনা বোধহয় বিদেশে থাকার লোভ সামলাতে পারেনি। যদিও ভালোবাসার কথা আমি ওকে কোনো দিন মুখে বলিনি জানো মা। ও আমার চোখে কি দেখেছিল জানি না। ও কার্ড দিয়ে চলে গেছিল আর যোগাযোগ হয়নি। আজ ওর বাবার কাছে যা শুনলাম তা খুব বেদনা দায়ক। বিয়ের পর ও বরের সঙ্গে নিউজিল্যান্ড চলে যায়। সেখানে প্রথম কয়েক মাস বেশ ছিল। তারপর শুরু হয় ওর বরের অবহেলা, মানসিক অত্যাচার। যে গান ছিল ওর প্রান সে গান বন্ধ করে দেয়। প্রথম দিকে বছরে একবার করে আসত দেশে। কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পারেনি। ওকে একা কোথাও থাকতে দিত না। না বাপের বাড়ি না শ্বশুর বাড়ি। নিজের আলাদা ফ্ল্যাট ছিল সেইখানে থাকত। চেতনাকে ঘরে রেখে সারাদিন নিজের বন্ধু বান্ধবীদের সাথে ঘুরে বেড়াত। ছোটবোনকে একটু একটু বলেছিল। কিন্তু ওর মা বাবা গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি। আর শ্বশুর বাড়ির লোকজন ওকেই খারাপ ভাবত। এইভাবে মেয়েটার মনটা শেষ করে দেয়। ওর বাবা বললেন, ও একটা বাচ্চা চেয়েছিল তখন শুরু করে শারীরিক অত্যাচার। কোনো রকমে বোনকে একটু জানাতে পেরেছিল। এরপর ও যখন অসুস্থ হয়ে যায় তখন ওর বর ওর বাবাকে ফোন করে নিয়ে আসতে বলে। কয়েক মাস আগে ওর বাবা ওকে নিয়ে আসে। কিন্তু ততদিনে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে। আমাদের এক বন্ধুর কাছ থেকে আমার ঠিকানা নিয়ে আমার কাছে এসেছে। মা আমি পারবো তো চেতনার পুরোনো সব খুশি, আনন্দ ফিরিয়ে দিতে? তোকে যে পারতেই হবে বাবা, নাহলে যে ভালোবাসা হেরে যাবে। তোর স্নেহ দিয়ে ভালোবাসা দিয়ে নতুন বছরে তুই চেতনার নতুন জীবন দিবি। ওর বাবার কাছ থেকে ওকে চেয়ে নিবি। সারা জীবন ওকে ভালো রাখার অঙ্গীকার করবি নতুন বছরের নতুন প্রভাতে। ঠিক আছে মা। তুমি আমার সঙ্গে থাকলে আমি সব পারব। তুমি থাকবে তো মা? ও খোকা বাবু তুমি এখানেই ঘুমিয়ে পড়েছ? ওঠো অনেক বেলা হয়ে গেছে। কাজ-কম্ম নেই? কারা এয়েছে দেখো! নববর্ষের নতুন সকাল নতুন ভাবে শুরু হলো সংকল্পের।

জুলাই ০২, ২০২১
নিবন্ধ

Bidhan Chandra Roy: বিরোধী বিধান'-র জ্যোতি স্নেহ

ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের মুখ্যমন্ত্রী সময়কাল ও তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে বহু কথা আলোচিত হয়। কিন্তু তাঁর আপাত গম্ভীর চেহারার মধ্যে অসম্ভব রসবোধ নিয়ে সেভাবে চর্চা হয়না। মানুষটির অসামান্য ব্যক্তিত্বের আড়ালে যে অনবদ্য রসবোধ সম্পন্ন একটি চরিত্র লুকিয়ে থাকত তা ওনার মুখের অভিব্যক্তি দেখে একেবারেই আন্দাজ করা যেতনা। তাঁর রসবোধ নিয়ে বহু কাহিনি লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে। শোনা যায় বিধান রায় প্রায়ই মজার ছলে তাঁর রোগীদের বলতেনঃ# ডাক্তারবাবুরা যে যে ওষুধ লিখে দেবে তা অবশ্যই কিনবেন, কেননা দোকানদারদেরও তো বাঁচতে হবে।# ওষুধ কিনে বাড়ি ঢুকেই ওইগুলি ডাস্টবিনে ফেলে দেবেন কারণ আপনাকেও তো বাঁচতে হবে! তাঁর গম্ভীর ভাবে রসিকতা শুনে ডাক্তাখানার উপস্থিত সকলে হেসে অস্থির হতেন।জানা যায় তিনি ঘনিষ্টমহলে বলতেন, রোগ সারাতে হাসি খুব দরকার। হাসি রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা অনেক গুন বাড়িয়ে দেয়। মন প্রফুল্ল থাকলে অসুখ বোধ কম থাকে। তাঁর মতে আমাদের অসুখের সত্তর ভাগ শারীরিক বাকিটা মানসিক। বিধাসভায় মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায়চিকিৎসক হবার বিশেষ ইচ্ছা ছোটবেলায় বিধান রায়ের ছিল না, তিনি একই সাথে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ফর্মের জন্য আবেদন করেছিলেন। ডাক্তারির ফর্মটা আগে আসায় ওটাতেই আবেদন করেন। কলেজ স্ট্রিট ওয়াইএমসিএ-তে তিনি থাকতেন। প্রবল অর্থাভাবের মধ্যেই তিনি ডাক্তারি পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। রোগীর বাড়িতে বারো ঘণ্টায় আট টাকা পারিশ্রমিকে মেল নার্সের কাজ অবধি করেছেন। মেল নার্স কথাটি আজকাল তেমন শোনা যায় না। অর্থাভাবে কলকাতার রাস্তায় ট্যাক্সিও চালিয়েছেন। কাজের গুরুত্ব বোঝাতে একথা তৎকালীন রাইটার্সের কর্মীদের প্রায়সই তিনি বলতেন। আজকের সমাজিক মাধ্যম সেই সময়ে থাকলে তাঁকে ট্যাক্সি ড্রাইভার মুখ্যমন্ত্রী আখ্যা দিতে খুব বেশী দেরী করত না।বিধান চন্দ্র রায় ও জ্যোতি বসু-র রাজনৈতিক ভাবধারা ও রাজনৈতিক দল সম্পুর্ণ দুই মেরু তে অবস্থিত ছিল। একজন ডান পন্থী আরেকজন কট্টর বামপন্থী। কিন্তু তাদের একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও সন্মানবোধ ছিল দেখার মত। এই সম্পর্ক নিয়ে বহু কাহিনী লোক মুখে ছড়িয়ে পড়ে।জগদীশ চন্দ্র বোসের জন্ম শতবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী নেহেরুর সাথে বিধান রায়জানা যায়, ১৯৫৪-তে বিধান চন্দ্র রায় তখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধী দলনেতা জ্যোতি বসু। তাঁর নেতৃত্বে শিক্ষকদের জঙ্গি আন্দোলনে বেসামাল সরকার। বিধানসভায় প্রতিদিন বিরোধীদের ওয়াক আউট। স্তব্ধ বিধানসভার কাজ। বিড়ম্বনায় পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা অবস্থা তথৈবচ। জঙ্গি আন্দোলনের জন্য বিরোধী দলনেতা জ্যোতি বসুর বিরুদ্ধে জারি হল গ্রেফতারি পড়োয়ানা। জ্যোতি বসু তখন বিধানসভায়। বিধানসভার বাইরে পুলিশ তাঁর অপেক্ষায়। বেরোলেই গ্রেফতার করবে জ্যোতি বসুকে। খবরটা বিধান চন্দ্রর কানে যেতেই তিনি তাঁকে আলাদা করে ডেকে বললেন, রাতে বিধানসভায় থেকে যেতে। যাতে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার না করতে পারে। আর তাঁর কোনো অসুবিধা না হয় তার ব্যবস্থাও তিনি করলেন। বিধান রায়ের এহেন আচরণে কংগ্রেসের অন্যান্য নেতারা খুশি হননি। বিধান রায়ের বক্তব্য, আমার বিরোধী দলের হলেও উনি খুব বড়ো রাজনীতিবিদ। ওঁকেও প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতীক নেতাদের কাছে সৌজন্যবোধের এই নিদর্শন মানুষ আশা করেনা। শোনা যায়, বিধান রায় পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে রেখেছিলেন যে, কোনও বিক্ষোভ হলেই জ্যোতিকে গ্রেপ্তার করে আগে জেলে ভরে দেবে। জ্যোতি বসু বারবার গ্রেপ্তার হয়ে আর জেলে গিয়ে তিতিবিরক্ত হয়ে একদিন বিধানচন্দ্রকে বললেন, আপনার পুলিশ যে কোনও আন্দোলন হলেই আমাকে ধরে কেন? বিধান রায় এতটুকু বিচলিত না হয়ে সহাস্যে উত্তর দিলেন তুমি তো জানো একটা প্রবাদ আছে When the storm came, tallest tree are the first hit. তা তুমিই তো একমাত্র সেই নেতা, তোমাকে গ্রেপ্তার করবে না তো, কাকে করবে? জ্যোতি বসু চুপচাপ শুনে চলে গেলেন। এইরকমই, জ্যোতি বসুকে আরেকটি বিতর্কে লজ্জিত করে দিয়েছিলেন বিধান রায়। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বিধান রায় প্রচুর টাকা খরচ করে একটা নতুন অফিস বানান, তাতে আনা হয় সেগুন কাঠের এক রাজকীয় চেয়ার। জ্যোতি বসু বিধানসভায় এর তীব্র প্রতিবাদ করলে মুখ্যমন্ত্রী উঠে দাঁড়িয়ে বলেন তুমি এতে প্রতিবাদ করছ কেন? তুমিই তো এই মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে একদিন বসবে। তরুণ বিরোধী দলনেতা সাংঘাতিক লজ্জা পেয়ে বসে পড়লেন।সৌজন্যের এক অনন্য নজীর ১৯৫২-র বিধানসভা ভোটের কিছু আগে নির্বাচনী প্রচারসভা থেকে একে অপরকে তীব্র আক্রমণ করছেন বিধানচন্দ্র রায় এবং জ্যোতি বসু। একদিন ধর্মতলাতে বিধান রায়ের জনসভা। সেখানে পৌঁছে গাড়ি থেকেই তিনি দেখেন, জ্যোতি হেঁটে যাচ্ছেন। তাঁর সেক্রেটারি দিয়ে জ্যোতিকে ডেকে পাঠিয়ে বিধান রায় জানতে চান, তিনি কোথায় যাচ্ছেন? প্রত্যুত্তরে জ্যোতি বসু বলেন, আপনার সরকার ট্রামের ভাড়া বাড়িয়েছেন। আজ প্রতিবাদ মিছিল আছে, সেখানেই যাচ্ছি। শুনে বিধান রায় বলেন, খালি পেটে বিধান রায় আর কংগ্রেসকে হারানো যাবে না। গাড়িতে এসো, খানকয়েক লুচি আছে, দুজন মিলে উদ্ধার করি। তারপর তুমি গিয়ে বিধান রায়কে গালাগালি কর।রাধাকৃষ্ণান,সরোজিনি নাইডু ও প্রধানমন্ত্রী নেহেরুর সাথে বিধান রায়১৫৫৩-এ গণনাট্য সংঘের জমিদারিপ্রথা উৎখাত নিয়ে ৫৯ টি নাটক চলাকালীন কংগ্রেস সরকার নিষিদ্ধ করে দেন। যদিও শোনা যায়, এতে বিধান রায়ের সায় ছিলনা। সেই বিবাদ শেষ অবধি বিধানসভা পর্যন্ত গড়ায়। বিধানসভা হলে বিরোধী দলনেতা জ্যোতি বসু বিধান রায়কে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি হিটলারের মত আচরণ করছেন। এর উত্তর দিতে গিয়ে বিধান রায় স্মিত হেসে বলেন হ্যাঁ হিটলার স্তালিনের উত্তর দিচ্ছে। এই উত্তরের প্রত্যুত্তর না দিয়ে জ্যোতি বসু নিজের আসনে বসে পরেন। তবে বিধান রায়ের ব্যক্তিগত সচিব সরোজ চক্রবর্তী লিখেছেন, দুজনের মধ্যে সমঝোতা ছিল যে, ভোটের সময় কেউই একে অন্যের নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে জনসভা করবেন না। ১৯৫২ সালের সাধারণ নির্বাচন ছাড়া আর কখনও কেউ এই চুক্তি ভাঙেননি। ডাঃ রায়ের বাড়িতে জ্যোতি বসু যখন কফি খেতে আসতেন ওঁর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সমস্যাবলী নিয়ে আলোচনা করতেন, তখন দুজনে একেবারে অন্য মানুষ। আমি এই ঘটনা বহুবার দেখেছি।ইদানীং রাজনীতিতে ছোট বড়ো সব নেতাকর্মী ও মন্ত্রীদের মুখে কারণে অকারণে কটুক্তি আর অশ্রাব্য ভাষার বন্যা বইছে। অনেকের অশ্রাব্য ভাষা কানে পাতা দায়। একে অপরের প্রতি ন্যূনতম সৌজন্যবোধ নেই বললে অত্যুক্তি হবেনা। অথচ এটা তো হওয়ার ছিলনা। সল্টলেক উপ-নগরী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিধান চন্দ্র রায় ২৪ জুন ১৯৬২। রাইটার্সে বিধান রায়ের শেষ দিন। সেদিন এক সন্ন্যাসী তাঁর সাথে দেখা করতে এলে তাঁকে বলছিলেন, শরীর তেমন ভালো ঠেকছে না, কাল নাও আসতে পারি। মাথায় তখন অসহ্য যন্ত্রণা। পরের দিন বাড়িতে ডাক্তার শৈলেন সেন ও যোগেশ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডাকা হল। তাঁদের সিদ্ধান্ত হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। ৩০ জুন ডাক্তার রায় তাঁর প্রিয় বন্ধু ললিতমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বললেন, আমি তিরিশ বছর হৃদরোগের চিকিৎসা করে আসছি, আমার কতটা কী হয়েছে আমি তা খুব ভাল করেই বুঝতে পারছি। কোনও ওষুধই আমাকে ভাল করতে পারবে না।১ লা জুলাই তাঁর জন্মদিন। সেদিনই তাঁর তিরোধান দিবস। ওই দিন তাঁর আত্মীয়স্বজনরা এলেন। পরিচারক কৃত্তিবাসের হাত থেকে এক গ্লাস মুসুম্বির রস খেলেন। বন্ধু সার্জেন ললিতমোহনকে দেখে খুশি হয়ে বললেন, ললিত আমার গুরুও বটে, ওর কাছ থেকে কত কিছু শিখেছি।তার পর এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে বললেন, আমি দীর্ঘ জীবন বেঁচেছি। জীবনের সব কাজ আমি শেষ করেছি। আমার আর কিছু করার নেই। এর পর বললেন, আমার পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। তাঁর পরেই নাকে নল, ইঞ্জেকশন এবং ১১টা ৫৫ মিনিটে নাগাদ শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দুঃসংবাদ পেয়ে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের স্ত্রী বাসন্তীদেবী বলেছিলেন, বিধান পুণ্যাত্মা, তাই জন্মদিনেই চলে গেল। ভগবান বুদ্ধও তাঁর জন্মদিনে সমাধি লাভ করেছিলেন। দেহাবসানের কয়েক বছর আগে কেওড়াতলা মহাশ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লির উদ্বোধন করতে এসে বিধানচন্দ্র বলেছিলেন, ওহে আমাকে এই ইলেকট্রিক চুল্লিতে পোড়াবে। ২ জুলাই ১৯৬২ তাঁর সেই ইচ্ছা পূর্ণ করা হয়েছিল।আর যাঁরা তাঁর নিন্দায় সদা মুখর ছিলেন তাঁদের সম্বন্ধে জীবনসায়াহ্নে বলেছিলেন, আমি যখন মরব তখন ওই লোকগুলোই বলবে, লোকটা ভাল ছিল গো, আরও কিছু দিন বাঁচলে পারত।বিধান রায়ের মৃত্যুর পর ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে তাঁকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে লেখা হয় first medical consultant in the subcontinent of India, who towered over his contemporaries in several fields? at his professional zenith he may have had the largest consulting practice in the world, news of his visit to a city or even railway station bringing forth hordes of would-be patients.জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়

জুলাই ০১, ২০২১
নিবন্ধ

আমার প্রথম প্রেমিক, আমার নন্দলালা

আমার প্রথম প্রেমিক, আজ আপনার জন্মদিন। মাত্র ৮৫-র তরুণ আজ আপনি। সেই কোন এক কৈশোরে পাড়ার লাইব্রেরি থেকে এনেছিলাম একটা পাতলা বই। খেলা যখন পড়ার বইয়ের ফাঁকে রেখে পড়েছিলাম আর মনে মনে হয়ে উঠেছিলাম বুলবুলি। আমিও ওরই মত লাজুক, আমিও চেয়েছিলাম কোনও রাজার সামনে ভালোলাগায় কেঁপে উঠতে।আরও পড়ুনঃ যারা অদৃশ্য রয়ে গেলেনঃ শ্রমিক ঠিকাদার বা দালালতন্ত্র!আমার ওই ছোট্ট জগতে আপনি এলেন উর্দু শায়েরী, গজল, কবিতা আর কতশত নাম না জানা কবি-লেখকের লেখার উদ্ধৃতি নিয়ে। না, আর কোন নায়ক নয়, আপনারই মুখ ভেসে উঠত চোখের সামনে, শিকারি আপনি, লেখক আপনি, গায়ক আপনি, সুদর্শন আপনি, খাদ্যরসিক আপনি, আমার কিশোরী মনে জায়গা করে নিলেন। আরও পড়ুনঃ নদী কে জায়গা দিনঃ প্রসঙ্গ গঙ্গা ভাঙ্গনআরও ছোটোতে ম্যাথস বলে একটা গল্প পড়েছিলাম আনন্দমেলাতে। অংকে কাঁচা আমি ধরেই নিলাম আপনিও অংকে কাঁচা। মনে হলো কত মিল। চার্টার্ড একাউন্টেন্ট কাকে বলে বুঝিনি তখনও। ভালোই হয়েছিল, অত কিছু জানলে ভালোবাসতে ভয় করত। ভীষণ যেতে ইচ্ছে করত আপনার কাছে। সাহস পাইনি। শুনেছিলাম চিঠি লেখেন আপনি। কিন্তু আমি তো যোজনগন্ধা নই, যদি উত্তর না দেন , সেই মনখারাপটা সইতে পারব না, এই ভয়েই কখনও আর চিঠি লেখা হয়ে উঠল না।আরও পড়ুনঃ মনের ঘরের স্বজনআজও যাওয়া হয়ে ওঠেনি ম্যাকলাক্সিগঞ্জ-এ, কোয়েল নদীর কাছে, কানহাতে, হাটচান্দ্রা, বাংরিপোসিতে। হবে কি এ জীবনে? জানি না। অনেক পরে আপনার ঋভু পড়ে জেনেছিলাম আপনি পেশাগত কাজে আসতেন আমার শহর বহরমপুরে। কিন্তু তখন জানতেও পারিনি। জানলেও কি যেতাম আপনার কাছে? বোধ হয় না। সামনে এগিয়ে কথা বলতে পারি না আমি। তাই আপনাকে দেখতে হত ভিড়ের মধ্যে থেকে। আর ভিড়ের মধ্যে চোখে পড়ার মত অসাধারণ নই আমি তাই নজরে আসতাম না আমি। তার থেকে, এই ভালো, দূরে থেকে ভালোবাসা।আরও পড়ুনঃ মুকুল রায় তো বিজেপি পার্টির মেম্বার, বললেন মমতাভালো থাকুন বুদ্ধদেব, তরুণ থেকে তরুণতর হয়ে থাকুন আমার জীবনে। আমার প্রথম প্রেমিক, আমার নন্দলালা, হয়তো কোন এক জন্মদিনে আমার সাহস হবে আপনার সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর, সেদিনের সেই কিশোরী হয়ে যাব সেদিন, প্রথম শরবিদ্ধা, বাঁশপাতার মত কাঁপব আপনার সামনে দাঁড়িয়ে। আপনি হয়তো হাতটা বাড়িয়ে দেবেন আমার দিকে, ভালোলাগায়, দেবেন তো? শুধু এটুকুর আশাতেই তো বেঁচে থাকতে সাধ হয়, হে রাজর্ষি!সুদেষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়

জুন ২৯, ২০২১
নিবন্ধ

Michael Madhusudan Dutta: 'দত্ত কুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন"

অযত্নে মা অনাদরে বঙ্গ কবিকুলেশ্বরে, ভিক্ষুকের বেশে মাতঃ দিয়াছ বিদায় ।কবির মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত কবিবন্ধু নবীন সেনের এই শোকবার্তা চিরস্মরণীয়।বাংলা রেনসাঁসের সার্থক প্রতিনিধি মধুসুদন দত্ত। বাংলা নাটকের পথিকৃৎ অমিত্রাক্ষর ছন্দের জনকের মৃত্যু খুব বেদনাদায়ক। ১৮৭৩ র ২৯ জুন নিঃস্ব অবস্থায় কলকাতার আলিপুরের এক হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর জীবন সঙ্গী হেনেরিটা-র মৃত্যু তিনি মেনে নিতে পারেননি। কবি ভীষন ভেঙে পড়েছিলেন। হেনেরিটার মৃত্যূর কিছুদিন পরেই দেহ রাখেন কবি। ১৮২৪ এর ২৫ শে জানুয়ারি বর্তমান বাংলাদেশের যশোহর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে মাইকেল জন্মগ্রহন করেন। মা জাহ্নবীদেবী তৎকালীন সময়ে একজন ব্যতিক্রমী মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। শিক্ষক ও অধ্যাপকরা তাঁর পাণ্ডিত্যে মুগ্ধ ছিলেন। তাঁর শৈশব কেটেছে মায়ের কাছেই পড়াশোনা করে। শৈশবেই মাইকেল ইংরেজী ও ইউরোপীয় সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। পিতা রাজনারায়ণ দত্ত ছিলেন সদর আদালতে নামাজাদা উকিল। ১৮৩৩ সালে মাইকেল কলকাতার হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। তাঁর বাকি পড়াশোনা শেষ করেন বিশপ কলেজ থেকে। কলেজ পাঠকালে তিনি তাঁর এক বন্ধুকে বলেছিলেন I happen to be great poet, with I am almost sure I shall be. তাঁর এই উচ্চাশা পরবর্তীকালে ফলপ্রসু হয়েছিল। ১৮৪৭ এ পারিবারিক সমস্যা ও অর্থিক অনটনের জন্য তিনি মাদ্রাজে (চেন্নাই) চলে যান। মাদ্রাজে থাকাকালীন তিনি বস্তি এলাকায় থাকতেন। সেখানকার এক মানসিক অনাথ আশ্রমে কাজ শুরু করেছিলেন। চার বছর পরে, ১৮৫১ সালে তিনি সেখানেই এক স্কুলে শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। সেখানেই তিনি হিন্দু ক্রনিকাল নামে এক পত্রিকা সম্পাদনা ও সহায়তা কাজে যোগ দেন।হিন্দু কলেজে পড়াশোনাকালীন তিনি ইংরাজি কবিতার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন বিশেষ করে বাইরনের প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল প্রশ্নাতীত। মাইকেল মাত্র ১৭ বছর বয়সে তাঁর প্রথম ইংরাজি কবিতা রচনা করেন। সে কবিতা তিনি তৎকালীন ইংল্যান্ডের বিখ্যাত প্রকাশদের পাঠিয়েছিলেন। বলাবাহুল্য তাঁর কোনওটাই ছাপা হয়নি। ১৮৪৩ এর ৯ই এপ্রিল তাঁর পরিবার ও পিতামাতার প্রবল আপত্তির বিরুদ্ধে গিয়ে খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহন করেন। ১৮৪৮ এ হেনেরিটাকে বিবাহের পূর্বে মাইকেল নাম নেন। ছোটবেলায় মধুসূদন মায়ের মুখে রামায়ণ পাঠ শুনতে খুব পছন্দ করতেন। সেই থেকেই তিনি কবিতার সুর ও ছন্দের প্রতি আকৃষ্ট হতে শুরু করেন। তিনি ইংরাজি ভাষায় টিমোথি পেনপোয়েম ছদ্মনামে কবিতা লিখতেন। তিনি ইংরেজি ছাড়াও ল্যাটিন, গ্রিক, ফারসি, হিব্রু, তেলেগু ও তামিল ভাষায় অনায়াসে কথা বলতে পারতেন। এমনকি ফারসি ও ইতালীয় ভাষায় কবিতাও লিখতে পারতেন। মাইকেল মধুসূদন দত্ত উনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি ও নাট্যকার। তিনি যে সময় বড় হয়েছেন তখন ইংরেজ দ্বারা পরাধীন ভারত। বাংলা তথা ভারতের নতুন প্রজন্ম মনে করতেন ইংরেজদের ভাষা, ইংরেজদের আচার আচরণ, ইংরেজদের ধর্মই শ্রেষ্ঠ । মাইকেল-ও ইংরেজিতেই কবিতা লিখতে শুরু করেন। তিনি আদ্যপ্রান্ত ইংরেজ হতে চাইতেন। সে কারনেই তিনি খ্রীষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেন। তাঁর লেখা The Visions of the past এবং The Captive Lady কবিতা দুটি Madras Circular পত্রিকায় টিমোথি পেনপোয়েম ছদ্মনামে মাদ্রাজ থেকে প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৪৯ খ্রিষ্টাব্দে। ১৮৫৬ তে তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন এবং পুলিশ কোর্টে চাকরি গ্রহণ করেন। এই সময় বেলগাছিয়া নাট্যশালার সংস্পর্শে আসেন। এখানে রত্নাবলী শীর্ষক সংস্কৃত নাটকের বাংলা অনুবাদ দেখে বাংলা নাটক সম্পর্কে অবহিত হন। ১৮৫৯ এ তিনি শর্মিষ্ঠা নাটক রচনা করেন। নাটকের প্রস্তাবনায় মধুসূদন লিখেছিলেনঃঅলীক কুনাট্য রঙ্গে মজে লোকে রাঢ়ে বঙ্গনিরখিয়া প্রানে নাহি সয়।এরপর তিনি মহাকাব্য রচনায় ব্রতী হন। ১৮৬১ তে তাঁর অমর রচনা মেঘনাদবধ কাব্য। কাব্যটি নব্যযুগের কাব্য সাহিত্যের প্রেক্ষাপটে কবির আবক্ষ কীর্তিস্তম্ভরূপে দন্ডায়মান। কৃত্তিবাস উত্তর রামায়ণ লেখকদের ন্যায় তিনি মেঘনাথবধ কাব্যকে রামায়ণের ন্যায় রামের বীরগাথায় পরিনত হতে দেননি। বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের সৃষ্টিও আকস্মিক ঘটনা । রাজা যতীন্দ্ৰমাহন ঠাকুর বলেছিলেন ফরাসী ভাষার মতো উন্নত ভাষায় অমিত্রাক্ষর ছন্দ রচনা করা হয়নি। অতএব বাংলার মতো সরলভাষায় অমিত্রাক্ষরের গাম্ভীর্য প্রকাশ করা অসম্ভব। প্রসঙ্গত তিনি গুপ্ত কবির ব্যঙ্গ রচনার কথাও তিনি উল্লেখ করেছিলেনঃ কবিতা কমলা কলা পাকা যেন কাঁদি ইচ্ছা হয় যত পাই পেট ভরে খাই ।মধুসূদন জবাবে বলেছিলেন, বৃদ্ধ ঈশ্বরগুপ্ত অমিত্রাক্ষর রচনা করতে পারেননি বলে আর কেউ পারবে না এটা ভাবা অনুচিত।বাংলার বিপুল শব্দভান্ডার থেকে জানা অজানা নানা শব্দ চয়ন করে তিনি এত অপুর্বভাবে এই মহাকাব্যে ব্যবহার করলেন যে করুণ ও বীররসের গঙ্গা - যমুনার সঙ্গম তীর্থস্বরূপ হয়ে উঠলো এই কাব্য। মেঘনাদবধ কাব্যে কবি রাক্ষসবীর রাবণ ও মেঘনাদকে রাক্ষস রূপে আঁকার চেষ্টা করেননি। সকলকেই তিনি মানুষরূপে, ভাগ্যবিড়ম্বিত রূপে এঁকেছেন। তারা পাঠকের সহানুভূতি পেয়েছে। উনবিংশ শতাব্দীর নব-রামায়ণ সৃষ্টি হয়েছে। কবির অমর সৃষ্টিঃ তিলোত্তমা সম্ভব (১৮৬৩), দ্য ক্যাপটিভ লেডি (১৮৪৯), ব্রজাঙ্গনা কাব্য (১৮৬১), হেক্টরবধ কাব্য, বীরঙ্গনা কাব্য, চতুদর্শ পদী কবিতাবলী। কবির দেহসমাধিস্থ করা আছে কলকাতার লোয়ার সার্কুলার রোডের সমাধিক্ষেত্রে। তাঁর সমাধিক্ষেত্রে কবির নিজেরই লেখা একটি কবিতা প্রস্তর খন্ডের স্মৃতিফলকে লিপিবদ্ধ করা আছে, যে গঙ্গা জলে গঙ্গা পুজা।দাঁড়াও, পথিকবর ! জন্ম যদি তব বঙ্গে ! তিষ্ঠ ক্ষণকাল ! এ সমাধিস্থলে (জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি বিরাম) মহীর পদে মহানিদ্রাবৃত দত্ত কুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন ! যশোরে সাগরদাঁড়ি কপোতাক্ষ তীরে জন্মভূমি , জন্মদাতা দত্ত মহামতি রাজনারায়ণ নামে , জননী জাহ্নবী !জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়

জুন ২৯, ২০২১
নিবন্ধ

ভগবানের সুরের ভাঁজে হৃদয় ভিজছে সকলের

তাঁর বেহালার সুরে মুগ্ধ পথচলতি মানুষ। ফুটপাথে বসে অশক্ত হাতের বাজানো একের পর এক সুরের মূর্ছনায় মোহিত হয়ে একটু হলেও দাঁড়িয়ে পড়েন অনেকেই। রুক্ষ পাকা চুল, পাকা দাঁড়ির ভবঘুরে ভগবান মালি সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই ধীরে ধীরে উঠে আসতে শুরু করে ভগবানের কাহিনি।ছোটবেলা থেকেই বাবার কাছে বেহালায় হাতেখড়ি ভগবানবাবুর। তারপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ছে। কিন্তু বেহালার সুর তাকে ছেড়ে যায়নি। তাই এই বিপদের সময়ে সেই বেহালার সুরকে আঁকড়ে ধরেই জীবনযুদ্ধে লড়ে চলেছেন তিনি। মূলত উত্তর কলকাতার রাস্তাতেই বেহালা বাজান ভগবান বাবু। মালদার বাসিন্দা হলেও কলকাতায় মেয়ে-জামাই রয়েছে। নাতনি হয়েছে খবর পেয়েই কলকাতায় আসা। আর তারপরেই লকডাউনে আটকে পড়া। এই পরিস্থিতিতে কাজ হারিয়েছে জামাই। তাই ছোট নাতনির মুখ চেয়ে রাস্তায় রাস্তায় বেহালা বাজিয়েই সারাদিন যা উপার্জন করেন, তাই দিয়েও মেয়ের সংসার চলে। কিন্তু ভিন রাজ্যে এই বৃদ্ধ দম্পতি একটু মাথা গোঁজার জায়গাটুকুও পায়নি। রাস্তার পাশেই রাত কাটান। সোশ্যাল মিডিয়ায় বৃদ্ধ বেহালাবাদককে দেখে তাঁর সঙ্গে আলাপ করতে আসেন তৃণমূল বিধায়ক তথা পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। তাঁকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন। স্থানীয় বিধায়ক ও মন্ত্রী শশী পাঁজার সঙ্গে দেখা করে ভগবান বাবুর পরিবারকে একটি থাকার জায়গার ব্যবস্থা করে দিতে বলেন। যেমন কথা তেমন কাজও হয়। মাথার উপর ছাদ পান ভগবান মালির পরিবার।আরও পড়ুনঃ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন তৃণমূল বিধায়কগত সপ্তাহে কলকাতা পুলিশের কমিউনিটি পুলিশিং উইং ও রক্ষক ফাউন্ডেশন নামক একটি স্বেচ্ছেসেবী সংস্থার যৌথ উদ্যোগে অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে সংবর্ধিত করা হয় এই প্রতিভাবান বেহালাবাদককে। আজ লালবাজারে একটি অনুষ্ঠানে মাননীয় নগরপাল সৌমেন মিত্র তাঁকে সংবর্ধিত করেন এবং একটি নতুন বেহালা উপহার দেন। উপহার পেয়ে আপ্লুত ভগবান মালি শুকনো ধন্যবাদ জানাননি। উপহার পাওয়া নতুন বেহালায় সুরের ভাঁজে সকলের হৃদয় ভিজিয়ে দিয়েছেন।

জুন ২৮, ২০২১
নিবন্ধ

Friends: একা এবং বন্ধুরা

জীবন মরণের সীমানা ছাড়ায়ে/ বন্ধু হে আমার রয়েছ দাঁড়ায়ে।। এই পংক্তিটা প্রথম পড়ি কৈশোরে। রবীন্দ্রনাথ হয়তো ঈশ্বরকেই বুঝিয়েছেন বা কোন ঈশ্বরপ্রতিম মানুষকে। কিন্তু আমার মনে পড়ত কতগুলো স্কুল ইউনিফর্ম পরা, এলোমেলো চুল, বা দুই বিনুনি, দুষ্টু হাসির মুখগুলোকে। আর মনে হত, ওরে বাবা! সারাজীবন থাকবে আবার মরার পরেও? কী সাংঘাতিক কান্ড। পৃথিবীতে অবতীর্ণ হওয়ার বছর তিনেক পরেই তাঁরা আমার জীবনে পদার্পণ করেছেন। (জনান্তিকে বলে রাখি এখনও অক্লেশে হাড়মাস ভাজা করে চলেছেন)।পড়তাম এক মিশনারি স্কুলে যেখানে বহুবিধ পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল। জানিয়ে পরীক্ষা, না জানিয়ে পরীক্ষা। কিন্তু চাপ ছিল না। মানে চাপ শব্দটা জানলে তো চাপে পড়বে। আমরা কিছু দুষ্টু ছেলে-মেয়ে হইহই করে উঠে যেতাম পরের ক্লাসে। কড়া নজরদারির মধ্যে দুষ্টুমির নিত্য নতুন উদ্ভাবন। সেই জন্যই বোধ হয় কখনও আমরা কেউ ক্লাসরুম প্রেমের স্বাদ পেলাম না। অধরা থেকে গেল সেই রোমাঞ্চ আমাদের কাছে। একসময় স্কুল শেষ, কিন্তু কলেজেও বন্ধু হলো না সেভাবে। পুরোনো হ্যাংওভার কাটলে তবেই না নতুন বন্ধু?ইউনিভার্সিটিতে এসে দুটো পাখা জুড়লো পিঠে। মনে হলো এলেম নতুন দেশে। আহা! সবই কি সুন্দর। কত নতুন নতুন জিনিস। মুগ্ধ মোহিত আমি-র জুটলো নতুন বন্ধু। চললো নতুন অভিযান। সারা রাতের ক্লাসিক্যাল গানের সুরে ভেসে যাওয়া, কখনও ফটোগ্রাফি এক্সিবিশন-এ ঘুরে ঘুরে ছবি দেখা, সব মিলিয়ে সে এক সব পেয়েছির দেশ। মধ্যিখানে বেশ কিছু বছর যোগাযোগ বিহীন। নেই তো নেইই.. । কি যেন নেই। হঠাৎ অভিমানে নাকের ডগা লাল হয়ে, গলার কাছে ব্যথা করে উঠলেও বলার লোক নেই। দুষ্টুমি করার লোক নেই। খোঁজ নেওয়ার লোকও তো নেই। অতঃপর, হঠাৎ একদিন মিলিল তারা মিলিল সে মেলা কি যে মেলা.... রাত ১২টায় ফোন করে জানান দেওয়া যে আমরা আছি,/তোর কাছাকাছি।আরও পড়ুনঃ প্পিতৃদিবসে বাবাকে খোলা চিঠি এক কন্যার আবার শুরু নরক গুলজার, বেড়াতে যাওয়া, পিকনিক করা, সে তো আছেই। এতটুকু মনখারাপেও ফোন বা লিখে লিখে তার গুরুত্বপূর্ণ কাজ শিকেই তোলা। অন্য কোথাও রাগ হলে, তাদের ওপর সেই রাগ ঝাড়া। সেখানে বলতে পারব না মানে কি কোথাওই পারব না? দোস্তলোগ হ্যায় না! এর মধ্যেই আবার সেই সুপ্ত বাসনা লেখালেখি করার মাদকতা ফিরিয়ে দিল এক বন্ধু। সে কি ছিনেজোঁক! প্রায়ই ফোনে উস্কানি দেয়। কিঞ্চিৎ লোভও দেখায়। অতএব মাঠে নেমে পড়া। এখন সবাই মিলে বেঁধে বেঁধে আছি। পৃথিবীতে এত বছর কাটানোর পরে বুঝেছি, জীবন-মরণের সীমানা ছাড়িয়ে বন্ধুই তো থাকে। ওরা আছে তাই আমি আছি।সুদেষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়

জুন ২৩, ২০২১
নিবন্ধ

পিতৃদিবসে বাবাকে খোলা চিঠি এক কন্যার

আজ পিতৃদিবস। আমাদের ছোটবেলায় এরকম কিছুর নাম শুনিনি । বোধহয় কারও জানা ছিল না যে বছরের বিশেষ কোন দিন বাবাদের জন্যও হয়। আমাদের শৈশব ছিল পিতৃময়। সংসারের সিদ্ধান্ত সব বাবাই নেবে, আমরা কি করব, কোথায় পড়ব, কি ভাবে সংসার চলবে সব কিছু। খুব ছোটতে বাবা আমাকে ভোরবেলা উঠিয়ে জল খাইয়ে নিয়ে যেত বাথরুমে। সকাল ৭টায় রিকশা আসবে স্কুলে নিয়ে যেতে।স্কুল থেকে ফিরে বাবাকে দেখতে পেতাম না, বাবার তখন অফিস। কিন্তু দুপুরগুলো চলতো বাবার করে দেওয়া রুটিনে। অঙ্ক দেওয়া থাকত খাতাতে। অঙ্ক কষে একটু ঘুমিয়ে নেওয়া। সেটাও আগাম বলে দিত বাবা। সন্ধ্যেয় এসে পড়াতে বসা। যখন একটু বড় হলাম, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। সাইকেল চালানো শিখতে হবে। আমাদের মফস্বল শহরে কোন বাস সার্ভিস ছিল না। আর রিকশা ভাড়া দিয়ে টানা যাচ্ছে না। তখন তেরো বছরের কিশোরীর চোখে ভয়, লজ্জা সব। সাইকেল আর শেখা হয় না। মাঠে বিকেলে অনেকে খেলছে, কিশোর থেকে কিছু যুবকও। তাদের চোখের সামনে পিঠে পড়লো বিরাশি সিক্কার এক থাপ্পড়। সদ্য কিশোরী আমার মুখ চোখ লাল হয়ে চোখে জল। মারলো তো বাবাই , কিন্তু এত ছেলের সামনে? মুগ্ধ দৃষ্টি গুলো কেমন বদলে গেল ব্যঙ্গের হাসিতে। কিন্তু ওমা! দিব্যি সাইকেল টাও চলতে থাকলো গরগড়িয়ে। একটু হাত সরগর হতেই বাবার সঙ্গে সাইকেল চালিয়ে হাজারদুয়ারী। বাবা বড় সাইকেল-এ সামনে, আমি পিছনে লেডিস ছোট লাল সাইকেল আমার। বোর্ড-এর পরীক্ষা, ভোরে ওঠা নিয়ে আমি নাজেহাল। ভোরে উঠতে পারি না, বাবা এলো কফির কাপ হাতে। গরম গরম কফি খেয়ে আমি আবার ঘুমে। এইভাবেই কেটে চলে দিন। ইউনিভার্সিটিতে এডমিশন। বাবা পৌঁছাতে গেল আমাকে, সেদিনটা টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছিল। বাবা আমাকে পৌঁছে টুকিটাকি জিনিস কিনে ফিরে যাচ্ছে, আমি দাঁড়িয়ে আছি দরজায়। বাবা বারবার বলছে তুই ভেতরে না গেলে আমি যাই কি করে আর আমি বলছি, তুমি যাও তারপরে তো যাব আমি। এই পহলে তুম-পহলে তুম এর টানাপোড়েনে কে যে জিতেছিল আজ আর মনেও নেই। বিয়ের পরে আমার ঘুম থেকে উঠে সর্বপ্রথম কাজ ছিল বাবাকে ফোন করা। ততদিনে বাবা অনেকটাই অসুস্থ, তবু ঘড়ির কাঁটা ৭টা ছুঁলেই ফোন আসত, তুমি কি আমাকে ফোন করতে ভুলে গেলে? তুই নয় তুমি, সম্বোধনেই ধরা পড়ত উষ্মা। তারও পরে তখন আমি মা, সন্তান পালনের টুকিটাকি বাবা আমাকে শিখিয়েছিল। বিশেষত, বাচ্চার খাওয়া-দাওয়া। আমার অতি দুরন্ত মেয়েকেও সামলেছে অপটু হাতে। তখন আমি জীবন যুদ্ধে পাগলপ্রায়। যখন একটু গুছিয়ে বসেছি, কন্যা আমার কাছেই। অফিস থেকে ফেরার পথে বিউটি পার্লার এ বসে আছি। উদ্দেশ্য, কিঞ্চিৎ সৌন্দর্য বৃদ্ধি। বাবার ফোন আসতেই কেটে দিলাম, দ্বিতীয় ফোনটা আসতে ধরলাম। নাহলে রিং করা থামাবেন না উনি। বললাম পার্লার এ আছি, পরে করছি ফোন ঘন্টা খানেক পরে আবার ফোন, বাধ্য হয়ে ধরে বললাম, এখনও হয়নি, শেষ হলে করছি আমার বাবার রাগে ক্ষোভে উক্তি, এখনও ওই পার্লার-এ বসে আছিস, ছোট থেকে এত মন দিয়ে যদি অঙ্কটা করতিস তাহলে কোথায় যে থাকতিস আজ! এবং হতভম্ব আমার প্রত্যুত্তর, এটা কি এইসময় ই মনে এলো তোমার! বাবা চলে গেছে, না বলেই। যে বাবা কিছু আমাকে না বলে করত না, কিরকম যেন এই সিদ্ধান্তটা একাই নিয়ে নিল। বাবাকে কোনদিন বলা হলো না তোমাকে ভালোবাসি। কোনওদিন জীবনে যা ভুল করেছি নতজানু হয়ে স্বীকার করা হল না। বলা হলো না বাবা তোমাকে ছেড়ে থাকা এখনও ভালো করে শেখা হয়নি আমার। অসমাপ্ত শিক্ষা নিয়ে কি করে চলবো আমি। কিছুই তো বলা হল না। তাহলে এতগুলো বছরে কি কথা বললাম আমি বাবার সঙ্গে? এতগুলো জরুরি কথা কি করে বাকি থেকে গেল? কবে শেষ করব এই অসমাপ্ত কথোপকথন আমি আর আমার বাবা? সুদেষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়

জুন ২০, ২০২১
নিবন্ধ

ম'নের ঘরের স্বজন

দেবনন্দন ব্যানার্জী সারাজীবনেও আমার মনের সংসারের স্বজনদের সঙ্গে মিতালী হয় না! তাঁদের সঙ্গে আমার পরিচয় নিবিড় হয় না। আত্মার-আত্মীয় হয়ে ওঠে না তাঁরা। দেহটাকে আপন ভাবলেও অধরা থেকে যায় সত্তার অস্তিত্ব। আমার ঘরে বসত করে মন কয় জনা?--এ, জানা হয়ে ওঠে না সারা জীবনেও। কাম-ক্রোধ-লোভ-মোহ যা-যা নিয়ে আমার এই সত্তা---তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক মধুর হয় না। কখনও অপব্যবহার বা কখনও ব্যবহারহীনতায় যাপিত হয় জীবন! এটা সত্যি যে সংসারের অভিভাবকটিকেই আমরা চিনতে পারি না। যিনিই চিনিয়ে দিতে পারেন ঐ ক-জনাকে। তিনিই বোলে দিতে পারেন কার সঙ্গে কী ব্যবহার হলে আমার উপভোগ আমার মনুষ্যত্বকে উপঢৌকন দেবে। এই সামান্য সহজ সোজা-সাপ্টা বোধটা থাকে না বলেই দুর্বুদ্ধি উপভোগের বদলে ভোগ করিয়ে অসুস্থ করে তোলে আমাকে। যারা আমার মিত্র হতে পারতো তারাই শত্রু হয়ে দাঁড়ায়। কখনও কখনও মনে হয়, তবে কি বৈরাগ্য সন্ন্যাসই সঠিক পন্থা! রবীন্দ্রনাথের অনুভব ভাবিত করে--বৈরাগ্য সাধনে মুক্তি সে আমার নয়/ অসংখ্য বন্ধন মাঝে লভিব মুক্তির স্বাদ। ত্যাগ কাকে করবো, সে তো আমার পরাজয়! আমি অযোগ্য তাই পারলাম না, আমার ছোটো-ছোটো আমিদের নিয়ে চলতে। আর তাতেই তো ব্যর্থতা। জীবনে মল-মূত্র ত্যাগ ছাড়া, আর কোনো ত্যাগ আছে বোলে তো মনে হয় না! কাম কখন প্রেমের বন্ধু হয়ে যায়, ক্রোধ কখন তেজ বিক্রম হয়ে অন্যায়ের মুখোমুখি দাঁড়ায়, লোভ কখন তৃপ্ত করে আপনাকে--সে তো আমারই ঐ অভিভাবক প্রেষ্ঠের আলিঙ্গনেই অসম্ভব সম্ভব হয়ে ওঠে। মনের সন্ন্যাসই আরও বৃহত্তর সংসারের জনক। আর সেখানেই আমার প্রবৃত্তিরূপ স্বজনদের সাথে সুন্দরের আরাধনা। নিশ্চিন্ত হতে পারি, একটা নির্ভরতা থাকলে। অনুরাগ-প্রেম বিল্লমঙ্গলকে প্রকৃত চিন্তামনিকে চেনালো, চণ্ডাশোককে ধর্মাশোক করলো, রত্নাকরকে বাল্মীকি করলো। সন্ন্যাসী শ্রেষ্ঠ মহাপ্রভু বললেন--সন্ন্যাস লইনু যবে ছন্ন হইলো মন/ কি কাজ সন্ন্যাসে মোর প্রেম প্রয়োজন। একজন মালিক থাকলে আমি নির্ভাবনায় বলতে পারি, অন্ধকারের আগেই আমি গৃহে ফিরবো। একজন মাহুত থাকলেই আমি নিঃসংশয় হতে পারি, স্বেচ্ছাচার আমার উপর আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে না। আর সেটি হওয়া চাই কোনো Living personality । আকাশের ভগবান হলে হবে না, কারণ তিনি আমায় ভাল-মন্দ , ন্যায়-অন্যায় কিছু বলতে পারেন না। আমার স্বেচ্ছাচারে নীরব থাকেন। প্রবৃত্তি তো সেই অতন্দ্র ঈশ্বর , জীবনটাকে উপভোগ করার জন্য। তাই তাঁকে বড্ড প্রয়োজন, ওদের(বৃত্তিগুলি) নিয়ে চলতে, শিখতে, জানতে। আর এই বৃত্তিই ছোট্ট বৃত্ত থেকে অনন্তে নিয়ে যায় একজন friend, guide, master-এর হাত ধরে। আমার মনের পরিচালনার ভারটি তাঁর হাতে সপলে মনের ঘরের সদস্যরা আমার আপন হয়ে উঠতে সময় লাগবে না। যেমন অতি মূর্খ শিবাজী রামদাস স্বামীর হাত ধরে অনন্ত জীবনের অধিকারী হয়ে উঠেছিলেন। অনেককেই বলতে শুনেছি--অহংকার ত্যাগ না হলে কিছুই হবে না। ফলিত বিজ্ঞান বলে অহং যায় না, দেহ থাকতে। তাই তো আমার প্রভু আমায় শিখিয়ে দেন , কিভাবে তার (অহং-এর) প্রভু হয়ে ওঠা যায়। অহংটা করতে হয় তাঁকে(আপন ইষ্ট) নিয়ে। আমার সব কৃতিত্বের মালিক তাঁকে ভাবতে হয়। আর তখুনি অহং আমার ক্রীতদাস হয়। আমি তাঁর সন্তান--এই বোধই আমার শত্রু অহংকে মিত্র করে তোলে। আমি পূর্ণ হই, পবিত্র হই।

ডিসেম্বর ১২, ২০২০
  • ‹
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
  • 6
  • 7
  • ›

ট্রেন্ডিং

রাজ্য

চন্দননগরে একই পরিবারের ৩ সদস্যের রহস্যমৃত্যু, তদন্তে নেমেছে পুলিশ

চন্দননগর, ৩০ মে: হুগলির চন্দননগরে বৃহস্পতিবার সকালে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী থাকলো স্থানীয় বাসিন্দারা। একই পরিবারের তিন সদস্যের রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে ছড়িয়েছে ব্যাপক উত্তেজনা। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন পরিবারের কর্তা, তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের কিশোর পুত্র। সূত্রের খবর, এদিন সকালে চন্দননগরের শ্রীপল্লি এলাকার একটি বাড়ি থেকে তিনজনের নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয়রা জানান, সকালবেলা দরজা না খোলায় সন্দেহ জাগে প্রতিবেশীদের। তারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করে।সূত্রের খবর, বুধবার ভোর ২টার দিকে চন্দননগর থানা কোলুপুকুর গড়েরধর এলাকায় তিন পরিবারের সদস্যের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা প্রতিমা ঘোষ (৪৬) এবং তার মেয়ে পৌষালী ঘোষ (১৩) এর মৃতদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন, মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রতিমার স্বামী বাবলু ঘোষ (৬২) কে দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তদন্তের সময় পুলিশ জানতে পারে যে বাবলু একটি টিনের বাক্স তৈরির কারখানায় কাজ করত। তবে, কিছু সময়ের জন্য, সে টোটো (তিন চাকার গাড়ি) চালানো শুরু করে এবং অবশেষে তার বাড়িতেই একটি ছোট দোকান শুরু করে।প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, এটি হয় আত্মহত্যা, নয়তো পরিকল্পিত খুন। তবে ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। বাড়ির ভিতরে কোনোরকম লুটপাটের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীদের অনেকেই জানিয়েছেন, পরিবারটি সদ্য আর্থিক সমস্যায় পড়েছিল এবং কিছুদিন ধরে মানসিক চাপের মধ্যে ছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে এবং ঘটনার ফরেনসিক তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ পরিবারের আত্মীয়-পরিজন ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।চন্দননগর কমিশনারেটের এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানান, আমরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছিআত্মহত্যা, পারিবারিক কলহ, অথবা বাইরের কোনো দুষ্কৃতীর হাত। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

মে ৩০, ২০২৫
রাজ্য

আইসিকে কদর্য ভাষা অনুব্রতর, FIR, শেষমেশ ক্ষমা প্রার্থনা

তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডলের একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হতেই রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় পড়ে যায়। সেই অডিওর শোনা যাচ্ছে, বীরভূম জেলা তৃণমূল কোর কমিটির অন্যতম সদস্য অনুব্রত মণ্ডল বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন। দুদিন আগে এই অডিও ক্লিপটি যে কোনও কারণেই ভাইরাল হয়ে যায়। তারপরেই জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ সিং, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার বোলপুর রানা মুখোপাধ্যায় বৈঠক ডেকে আইসি লিটন হালদারকেও ডেকে পাঠান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বোলপুর এসডিপিও রিকি আগরওয়াল সহ চার পুলিশ কর্তা। উল্লেখ্য, গতকালই অর্থাৎ বৃহস্পতিবার নাগরিক কমিটির ডাকে বোলপুর থানায় এক বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়া হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামীরা। অভিযোগ, আইসি লিটন হালদার বিভিন্ন জনের কাছ থেকে তোলাবাজি অর্থ দাবি করেন। অনুব্রত মণ্ডলকেও, এ ব্যাপারে সোচ্চার হতে দেখা যায়। যদিও এ ব্যাপারে পুলিশের তরফে কোন বক্তব্য জনসমক্ষে আসেনি। অনুব্রতর কদর্য বক্তব্য সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পরই তীব্র নিন্দা হয় বিভিন্ন মহল থেকে। এমনকি বিজেপির রাজ্য শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্ব শাসকদলকে আক্রমণ করার হাতিয়ার পেয়ে যায়। একইসঙ্গে তৃণমূল দল থেকে নিজস্ব হ্যান্ডেলে অনুব্রত মণ্ডলের ঘটনার নিন্দা করা হয়। বলা হয় যে, অনুব্রত মণ্ডল একজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন তার সঙ্গে আমাদের দল সম্পূর্ণ দ্বিমত প্রকাশ করছে। এবং এই মন্তব্যকে ও সমর্থন করছে না। পাশাপাশি, দল তাকে নির্দেশ দেয় যে আগামী চার ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে দল শোকজ নোটিশ জারি করবে। ইতিমধ্যে, পুলিশের তরফে একটি মুখবন্ধ খামে চিঠি এসে পৌঁছায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে। অন্যদিকে, বোলপুর থানায় বিএনএস এর ৭৫, ১৩২, ২২৪ ও ৩৫১ ধারায় অনুব্রতর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। পাশাপাশি, অডিও ক্লিপটি কিভাবে ভাইরাল হল তা নিয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানান, বীরভূমের পুলিশ সুপার আমানদীপ সিং। অবমাননাকর মন্তব্যের তদন্ত শুক্রবার বোলপুর দলীয় কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডল একটি ভিডিও বার্তায় সকলের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, যে নানুরের শিঙ্গিতে তার এক দলীয় কর্মীর পা ভেঙে গুড়ো করে দেওয়া হয় সে ব্যাপারে তিনি আইসিকে দেখার অনুরোধ করেন। অনুব্রত বলেন, যে নুরুল নামে সেই দলীয় কর্মী গুরুতর অবস্থায় আহত হন। তারপর সেখান থেকে তাকে ফোন করা হয়। রাত্রি দশটায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। ফোনে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর, তিনি আইসিকে বলেন যে, ওই আহত ব্যক্তিকে বাঁচানোর জন্য আপাতত হাসপাতালে ভর্তি করুন। একইভাবে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ও আইসিকে অনুরোধ করেন। কিন্তু আইসি তাকে একটি খারাপ কথা বলেন। যেটা তিনি আর বলতে চাইছেন না। তার পক্ষে (অনুব্রতর) এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করা উচিত হয়নি। তিনি ক্ষমা চাইছেন।

মে ৩০, ২০২৫
রাজ্য

বিধানসভা ভোটের দামামা বাজিয়ে দিলেন মোদী, শিক্ষা থেকে হিংসা উঠে এল ভাষণে

২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে দিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আলিপুরদুয়ারের জনসভায় কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন তৃণমূল কংগ্রেসকে। এই সরকারকে উৎখাতের ডাক দিয়েছেন মোদী। পাশাপাশি তাঁর ভাষণে উঠে এসেছে মুর্শিদাবাদ, মালদার হিংসার কথা, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা বরবাদ বলেও উল্লেখ করেছেন মোদী।বৃহস্পতিবার নরেন্দ্র মোদী বলেন, মুর্শিদাবাদ, মালদায় যা হল তা এখানকার সরকারের নির্মমতা। দাঙ্গায় গরিব মা-বোনেদের জীবনভরের পুঁজি লুঠ হয়ে গেল। তুষ্টিকরণের রাজনীতি চলছে, গুন্ডাদের খোলামেলা ছুট দিয়ে রেখেছে সরকার। সরকারে থাকা লোকজন, পার্টির লোকজন মানুষের ঘর চিহ্নিত করে জ্বালাচ্ছে, পুলিশ দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছে। এখানে কী পরিস্থিতি চলছে সেটা কল্পনাও করতে পারছি না। সরকার এভাবে চালাতে হয়? গরিব মানুষের উপর অত্যাচার হলেও সরকারের ভ্রুক্ষেপ নেই। সব কিছুতেই এখানে আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। বাংলার মানুষেরও আর তৃণমূলের সরকারের উপর ভরসা নেই। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ একাধিক সংকটে জেরবার বলেও দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। একের পর এক ইস্যু তুলে ধরতে থাকেন নরেন্দ্র মোদী। এই ইস্যুতেও তৃণমূল পরিচালিত সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন মোদী। তাঁর কথায়, সংকটে জেরবার বাংলা। প্রথম সংকট, একদিকে হিংসা-অরাজকতা চলছে। দ্বিতীয়, মা-বোনেদের ওপর অত্যাচার চলছে। তৃতীয়ত, যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘোরতর নিরাশা তৈরি হয়েছে, কর্মহীনতার যন্ত্রণায় ভুগছে যুবরা। চতুর্থত, বেপরোয়া দুর্নীতি চলছে। পঞ্চম সংকট হল, এই রাজ্যের গরিবের অধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছে শাসকদলের রাজনীতি।এরই পাশাপাশি অপারেশন সিঁদুর (Operation Sindoor) প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিরা যা করেছে, সারা ভারতের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের লোকেদেরও তুমুল আক্রোশ ছিল। আপনাদের সেই আক্রোশ আমি ভালোই বুঝেছি। জঙ্গিরা আমাদের মা-বোনেদের সিঁদুর মোছানোর দুঃসাহস দেখিয়েছিল। আমাদের বীর সেনারা ওদের সিঁদুরের শক্তি কী সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে। আমরা জঙ্গি ঘাটি ধ্বংস করেছি। পাকিস্তান এটা কল্পনাও করতে পারিনি। জঙ্গিদের ঠিকানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন শিক্ষা পাবে পাকিস্তান কল্পনাও করেনি। সন্ত্রাসের লালন পালন করে পাকিস্তান। ১৯৪৭-এর পর থেকেই ভারতে সন্ত্রাস পাকিস্তানের। বাংলাদেশে পাকিস্তানের অত্যাচার ভোলবার নয়। তিনবার পাকিস্তানকে ঘরে ঢুকে মেরেছে ভারত।SSC-এর নিয়োগ দুর্নীতির জেরে এই রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। শাসকদল তৃণমূলের তাবড় নেতা-মন্ত্রী পাহাড়-প্রমাণ এই দুর্নীতিতে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের সভামঞ্চ থেকে রাজ্যের এই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষাক্ষেত্রে এমন দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে বেনজির নিশানা করেছেন নমো।প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেছেন, তৃণমূলের নেতারা এত বড় পাপ করেও নিজেদের ভুল মানতে নারাজ। হাজার-হাজার পরিবারকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলা হয়েছে। গরিব পরিবারের ছেলে-মেয়েদের অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা বরবাদ। শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেও তৃণমূলের নেতারা মানতে নারাজ। বাংলায় হাজার-হাজার শিক্ষকের কেরিয়ার বরবাদ। এখানকার যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘোরতর নিরাশা তৈরি হয়েছে। কর্মহীনতার যন্ত্রণায় ভুগছে যুবরা। বেপরোয়া দুর্নীতি নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে লাগাতার মানুষের বিশ্বাস কমছে।

মে ৩০, ২০২৫
রাজ্য

মেয়ের প্রথম জন্মদিনে রক্তদান শিবির! সাধুবাদ মালদা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের

মেয়ের প্রথম বছরের জন্মদিনের মাধ্যমে মালদা মেডিকেল কলেজের ব্লাড ব্যাংকের রক্ত সংকট মেটানোর বার্তা নিয়ে এগিয়ে এলেন দাস পরিবার। বুধবার সকাল থেকেই বাড়ির একমাত্র মেয়ের প্রথম বছরের এই জন্মদিনকে ঘিরেই ধুমধাম ভাবে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে ইংরেজবাজার পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাটুলি এলাকার দাস পরিবার। বাড়ির সামনেই জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের ভ্রাম্যমান রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় দাস পরিবারের পক্ষ থেকে। আর এই রক্তদান শিবিরের প্রথম রক্তদাতা হিসাবে ছোট্ট এক বছরের আদিক্সা দাসের বাবা দেবাশীষ দাস স্বেচ্ছায় রক্তদান দিয়ে কর্মসূচি সূচনা করেন। এদিন এই জন্মদিন উপলক্ষে বিকেল পর্যন্ত দেবাশীষবাবুর আত্মীয় পরিজন, বন্ধু বান্ধব মিলিয়ে প্রায় ৫০ জন স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। দেবাশীষবাবুর এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে মালদা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ , স্বাস্থ্য দপ্তর এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।মালদা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল ডাঃ পার্থপতিম মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এটি খুব ভালো উদ্যোগ। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন , নানান রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলি মাঝে মধ্যেই স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করছেন। এদিন ইংরেজবাজার পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাটুলি এলাকায় এক বছরের ছোট্ট আদিক্সা দাসের জন্মদিন উপলক্ষেই এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিলেন তাঁর বাবা দেবাশীষ দাস। সঙ্গ দিয়েছিলেন দেবাশিষবাবুর স্ত্রী কোয়েল সাহা দাস। এদিন জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর এবং মালদা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা নিয়ে ভ্রাম্যমান ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্পের একটি বড় গাড়ি ছোট্ট মেয়ে আদিক্সা দাসের বাড়ির সামনে গিয়ে হাজির হয়। সেই ভ্রাম্যমান গাড়িতেই স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় ব্যবসায়ী দেবাশিষবাবুর পুরাটুলি এলাকায় নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। পরিবারের একমাত্র মেয়ে আদিক্সার জন্মদিনে এমন পরিকল্পনা অনেক আগে থেকে নিয়েছিলেন দেবাশিষবাবু এবং তার স্ত্রী কোয়েল সাহা দাস । আর সেটা কার্যত বাস্তবে করে দেখালেন। ব্যবসায়ী দেবাশিষ দাস বলেন, মেডিকেল কলেজে চিকিৎসারত রোগীর আত্মীয়েরা এক ইউনিট রক্তের জন্য কিভাবে ব্লাড ব্যাংকে ছোটাছুটি করছে। মাঝেমধ্যেই দেখি মেডিকেল কলেজের রক্তের সংকট রোগীদের হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে। আমিও একসময় হয়রানির শিকার হয়েছিলাম। তাই এদিন মেয়ের জন্মদিনে এমন ভাবেই স্বেচ্ছায় রক্তদানের শিবির করেছি। আমার আত্মীয় পরিজন বন্ধু-বান্ধবরা অনেকেই এগিয়ে এসে স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছবি দাস জানিয়েছেন, এটা খুব ভালো উদ্যোগ । আমার এলাকার দাস পরিবার তাদের বাড়ির একমাত্র মেয়ের প্রথম জন্মদিনে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছেন । তাদের এই কর্মসূচিকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। এভাবেই সকলকে এগিয়ে আসা উচিত।

মে ২৯, ২০২৫
খেলার দুনিয়া

বিশ্বের তারকা ফুটবলার ইয়ামালকে মনে আছে? বিশ্বের অন্যতম বড় ক্লাবে ১০ নম্বর জার্সির মালিক ১৭ বছরেই

মনে আছে লামিল ইয়ামালের কথা? গত বিশ্বকাপ ফুটবলে স্পেনের নাবালক তারকা ফুটবলার। জার্মানীর মাঠ কাঁপিয়ে দিয়েছিল এই ইয়ামাল। আগামী ২০৩১ পর্যন্ত ইয়ামাল লা লিগাতে বার্সেলোনার হয়েই খেলবেন। এই বয়সে মাল্টি মিলিয়নের চুক্তি হয়েছে বার্সেলোনার সঙ্গে ইমামালের। লা লিগাতে এই মরসুমে নিজে শুধু ১৮টি গোল করেননি, গোল করতে সহায়তা করেছেন আরও ১৩টি ক্ষেত্রে। বিপক্ষের ডিফেন্সে রীতিমতো ত্রাস সৃষ্টি করেন এই স্পেনের এই ফুটবলার। খ্যাতি পয়েছেন গত জার্মানী বিশ্বকাপে। স্পেনের দলে প্রয়োজনীয় ফুটবলার ছিলেন তিনি। জার্মানী শ্রম আইন অনুযায়ী ফাইন দিয়েও তাকে দলে রেখেছিল স্পেন। তার ফায়দাও পেয়েছিল তারা। এবার বার্সেলোনার সঙ্গে তার চুক্তি হয়েছে প্রতি মরসুমে তিনি পাবেন বেসিক হিসাবে ১৫ মিলিয়ন ইউরো, যা বোনাস নিয়ে ২০ মিলিয়নে দাঁড়াতে পারে। বার্সেলোনার হয়ে তিনি ইতিমধ্যে মোট ১০৬টি গোল করেছেন। মাত্র ১৭ বছরবয়েস ইয়ামাল যে অর্থ পাচ্ছেন তা যে কারও কাছে বড় স্বপ্ন। তা আগে কেউ পায়নি। তাছাড়া এই মরসুমে ইয়ামাল দলের ১০ নম্বর জার্সি পরবেন।

মে ২৯, ২০২৫
রাজ্য

মেমারিতে বাবা-মাকে খুন করে বনগাঁয় গিয়ে তান্ডব, গ্রেফতার গুণধর ছেলে, ধুন্ধুমার কাণ্ড

শুরু মেমারিতে, যার শেষ হল বনগাঁতে। গুনধর ইঞ্জিনিয়ার ছেলে বাবা-মাকে নৃশংস ভাবে খুন করে পালিয়েছিল বনগাঁয়। সেখানে গিয়ে এলোপাথারি ছুরি চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে জখম করেছে। তাকে জোর করে বের করার জন্য থানা আক্রমণ করেছে স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা। পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। ধুন্ধুমার কাণ্ড। বুধবার সকালে গলার নলি কাটা অবস্থায় বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে উদ্ধার হয় বৃদ্ধ মা ও বাবার রক্তাত মৃতদেহ। মোস্তাফিজুর রহমান (৬৫) ও মমতাজ পারভীন (৫৫)। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের মেমারি পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিয়ারা মুক্তারবাগান এলাকায়। জোড়া খুনের খবর পেয়ে জেলার পুলিশ সুপার সায়ক দাস দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। তবে মৃত দম্পতির ছেলে বাড়িতে না থাকায় পুলিশের সন্দেহ বাড়তে থাকে। তবে এটা যে খুনের ঘটনা তা নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত ছিল পুলিশ। খুনের পর বৃদ্ধ দম্পতিকে ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে বের করে আনা হয়েছিল। সেই কারণে গোটা নানা জায়গায় রক্তের দাগ দেখা গিয়েছে। রাতে দিকে এই ঘটনার আঁচ গিয়ে পড়ে সীমান্ত এলাকায় উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয়। জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির ছেলে হুমায়ূন কবির বাইরে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতো। হুমায়ুনের মানসিক সমস্যা আছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। তাছাড়া বাড়ির সিসিটিভির হার্ড ডিস্ক উধাও বলে জানা গিয়েছে। বৃদ্ধ দম্পতির দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি বনগাঁ খান শরীফে ঢুকে বেশ কয়েকজনের ওপরে ছুরি নিয়ে আক্রমণ করে। এই ঘটনায় কয়েকজন আহত অবস্থায় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। বনগাঁ খান শরীফের সামনে কিছুক্ষণ অবস্থান করে সংখ্যালঘুরা। জানা গিয়েছে, একদল বনগাঁ থানায় এসে আসামিকে ছাড়ানোর জন্য চেষ্টা করে এবং বনগাঁ থানায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং কয়েকজনকে আটক করেছে। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছান বনগাঁর এসপি দীনেশ কুমার। পরে পুলিশ জানতে পারে ওই যুবক মেমারিতে বাবা-মাকে খুন করে বনগাঁয় এসে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।বনগাঁ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার সাংবাদিকদের জানান, আক্রমণকারী যুবকের নাম হুমায়ন কবির। বয়স ৩৫ বছর, বাড়ি বর্ধমানের মেমারি। আজ সকালে এই ব্যক্তি তার বাবা-মাকে খুন করে এখানে এসেছে। তারা ছুরির আঘাতে চার জন আহত হয়েছে। এদিকে থানা ভাঙচুরের ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আঘাত পেয়েছেন একজন কনস্টেবল ও একজন এএসআই। এদিকে রাতেই মেমারি থানার পুলিশ পৌঁছে গিয়েছে বনগাঁ থানায়।

মে ২৯, ২০২৫
রাজ্য

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জের, যুবকের মাথা ফাটিয়ে, হাত কেটে দিল গৃহবধূ

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাওয়ায় যুবকের উপরে আক্রমণ ও তার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ প্রতিবেশী গৃহবধূর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বনগাঁয়। প্রতিবেশী গৃহবধূর সঙ্গে যুবকের চার বছরের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাওয়ায় যুবকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া, ব্লেড দিয়ে হাত কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে। শুধু যুবকের উপর হামলা করেই থামেনি প্রতিবেশী ওই গৃহবধূ। যুবকের পরিবারের অভিযোগ, ওই গৃহবধূ তাদের বাড়ির খাবারে বিষ মিশিয়ে দিয়েছে এবং বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগণার বনগাঁ থানার সভাইপুর এলাকায়। সোমবার বনগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করে যুবক। যুবকের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত গৃহবধূকে গ্রেফতার করেছে বনগাঁ থানার পুলিশ। অভিযুক্ত গৃহবধূকে মঙ্গলবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ।

মে ২৮, ২০২৫
রাজ্য

গভীর রাতে বোমাবাজি ও গুলি হরিহরপাড়ায়, জখম এক, গ্রেফতার ৪

সোমবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানার অন্তর্গত নাজিরপুর পূর্বপাড়া এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অভিযোগ, ওই রাতে একদল দুষ্কৃতী এলাকায় বোমাবাজি চালানোর পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দা নাজিমউদ্দিন শেখ ওরফে কালুকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।গুলিতে তাঁর পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে। স্থানীয়রা তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে হরিহরপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ ও পরে কলকাতার একটি হাসপাতালে রেফার করা হয়।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জমি দখলকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল। সেই বিবাদের জেরেই এই হামলা বলে প্রাথমিক অনুমান। উল্লেখযোগ্য যে, দুই পক্ষই শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত বলে এলাকাবাসীর দাবি।এই ঘটনায় হরিহরপাড়া থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই চারজনকে গ্রেফতার করেছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকলেও বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্ত চলছে।হরিহরপাড়া থানার নাজিরপুর পূর্বপাড়া এলাকায় বোমাবাজি ও গুলি চালানোর ঘটনায় আগ্নেয়াস্ত্র গুলি উদ্ধারসহ চার জনকে গ্রেফতার করে বহরমপুর জেলা জজ আদালতে পাঠানো হলো। ধৃতদের তিনজনের বাড়ি নাজিরপুর পূর্বপাড়া এলাকায় একজনের বাড়ি চোয়া এলাকায়

মে ২৮, ২০২৫

Ads

You May Like

Gallery

265-year-old "Mukhopadhyay House" in Bhavanandpur, Kalnar, played vermilion on Dasami during Durga Puja
BJP candidate Locket Chatterjee campaigned on the banks of the Ganges from Chandannagar Ranighat to Triveni Ghat wishing New Year.
A living depiction of history with a touch of color, everyone is enthralled by the initiative of the Eastern Railway
Sucharita Biswas actress and model on Durga Puja
Lord Kalabau came up in palanquin; Navapatrika walked towards the mandap - the puja started
On Sunday, the 'Hilsa festival' is celebrated in the city with great joy.
Check out who has joined Mamata's new cabinet
Take a look at the list of recipients at the Bangabibhushan award ceremony
If you are grassroots, you will get ration for free. Lakshmi Bhandar, Kanyashree, Swastha Sathi, Krishakbandhu, Oikyashree, Sabujsathi — you will get all.

Categories

  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও

Company

  • About Us
  • Advertise
  • Privacy
  • Terms of Use
  • Contact Us
Copyright © 2025 Janatar Katha News Portal